মুসলিম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মুসলিম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)
বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে কালজয়ী চিরন্তন আদর্শ হিসেবে একমাত্র ইসলামই সব যুগে মানবসমাজে মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। দুনিয়াবাসীর কাছে সর্বপ্রথম মানবাধিকারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক অবস্থায় নবদীক্ষিত মুসলমানদের জীবনে যে অমানবিক অত্যাচার ও নিপীড়ন নেমে এসেছিল, তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছিল। আরবের কাফির-মুশরিকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানবতার মূর্ত প্রতীক নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করেন। এত অত্যাচার সত্ত্বেও ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) সবাইকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জগদ্বাসীর সামনে উপস্থাপন করে রেখেছেন।

সভ্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণার সূত্রপাত

পাশ্চাত্য সভ্যতায় প্রথম মানবাধিকারের ধারণার জন্ম হয় খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে প্রথম ঘোষিত হয় Declaration of the People’s Right এবং ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন সংবিধানে সংযোজিত হয় The Bill of Rights.এর পর থেকেই পাশ্চাত্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণাটি বিকশিত হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ববাসী এ বিষয়ে আরো সচেতন হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ৩০ ধারাসংবলিত সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বটে; কিন্তু কোনো রাষ্ট্রের ওপর এই সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

ফিতরাত তথা স্বভাবধর্ম ইসলাম মানবজীবনের জন্য উপযোগী আদর্শ পেশ করেছে। ইসলামে মানবাধিকার জীবনের সব দিক ও বিভাগে সমভাবে ব্যাপৃত। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবামূলক মৌলিক চাহিদাকেও ইসলাম মানবাধিকারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। জীবনরক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক তথা সব ক্ষেত্রে উপরোক্ত মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বজনীন মানবাধিকারের মাইলফলক মহানবী (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণে তা স্পষ্ট। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘হে মানবজাতি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক। তোমাদের পিতা হজরত আদম (আ.) এক। সাবধান! ‘অনারবের’ ওপর ‘আরবের’ কিংবা ‘আরবের’ ওপর ‘অনারবের’, শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর কৃষ্ণাঙ্গদের কিংবা কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর শ্বেতাঙ্গ মানুষের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।”

ইসলামে মানুষের নিরাপত্তা

ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। মহান স্রষ্টা প্রাণ দানের মাধ্যমে মানবজীবনকে যেমন সম্মানিত করেছেন, তেমনি জীবন হরণকে করেছেন নিষিদ্ধ। শরিয়তে কেবল বিচারকের রায়ের মাধ্যমে কারো জীবন সংহার স্বীকৃত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা কোরো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৩)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ‘নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়েদা : ৩২)

সম্পদ ও সম্ভ্রম রক্ষার অধিকার

ইসলাম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেয় এবং বৈধ উপায়ে উপার্জিত সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে। বৈধ উপার্জনের অধিকার, তার মালিকানা রক্ষা, হস্তান্তর, দান এবং তা ভোগ করার অধিকার ইসলাম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা বাকারা : ১২৮)

অন্যদিকে প্রত্যেক নাগরিকের ইজ্জত-আবরু রক্ষার গ্যারান্টি দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মানুষের মর্যাদাহানি, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নিন্দা, কুৎসা রটানো, বিদ্রূপ ও উপহাস করা, নাম ও উপাধি বিকৃত করাকে নিষিদ্ধ করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রূপ না করে।’ (সুরা হুজুরাত : ১১) এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের কাছে পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস।’ (সহিহ বুখারি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ. ৬৩২)

ইসলাম ও ব্যক্তিস্বাধীনতা

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় নিশ্চয়তা। যেকোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ইসলামী নীতি অনুযায়ী কোনো উপযুক্ত আদালতে আইনানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, আটক বা বল প্রয়োগ করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সমান সুযোগ থাকবে। বিচার কার্যক্রমে এ ন্যায়নীতি অনুসরণের ব্যাপারে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ—‘তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তা করবে।’ (সুরা নিসা : ৫৮) এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ থাকবে।’ (ড. ম. ই পাটোয়ারী ও মো. আখতারুজ্জামান, মানবাধিকার ও আইনগত সহায়তাদানের মূলনীতি, পৃ. ৫)

নারীর অধিকার

নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামই সর্বপ্রথম বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, সম্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। স্ত্রীর প্রতি আচরণ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।’ (সুরা বাকারা : ২২৮)

ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত ঘোষণা করে নারীর মর্যাদা সমুন্নত করেছে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অধিকারেরও স্বীকৃতি দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘তোমরা তা কামনা কোরো না, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো ওপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, পুরুষদের জন্য রয়েছে ওই অংশ, যা তাদের অর্জন, আর নারীদের জন্যও ওই অংশ, যা তাদের অর্জন।’ (সুরা নিসা  : ৩২)

সংখ্যালঘুদের অধিকার

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের ন্যায়সংগত অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি, ইজ্জত-সম্মান, চাকরি ইত্যাদির নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। মদিনা সনদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মদিনায় বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও বাকি অংশের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হয়নি। অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাস্যদের নিন্দাবাদ ও গালমন্দকে কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এভাবে—‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে, তাদের উপাস্যদের তোমরা গালাগাল কোরো না।’ (সুরা আনআম : ১০৮) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের মতোই এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’ রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘সাবধান! যদি কেউ কোনো মুআহিদের (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক) প্রতি জুলুম করে বা তাকে তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা সাধ্যাতিরিক্ত কোনো কাজ তার ওপর চাপিয়ে দেয় অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে কোনো মালামাল নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে থাকব।’ (আবু দাউদ, মিশকাত পৃ. ৩৫৪) মূলত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান  Charter of Madina-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি; বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৫

2050 সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম থাকবে ভারতে


২০৫০ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান থাকবে ভারতে। ইন্দোনেশিয়ার চেয়েও ভারতে বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠী বসবাস করবে। সারা বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ২৮০ কোটিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপে এমন তথ্য মিলেছে। পিটিআইয়ের খবরে প্রকাশিত ওই জরিপের তথ্যে জানানো হয়, ২০৫০ সালে বিশ্বে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা হবে ১৪০ কোটি। ভিন্নধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা হবে ২৯০ কোটি।

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে বলে ওই জরিপের তথ্যে জানানো হয়। আসাম রাজ্যে মুসলমানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। জরিপের তথ্যে জানানো হয়, ২০৫০ সালে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতে সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করবে। আগামী ৪০ বছরে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি বাড়বে। তবে অন্য যেকোনো ধর্মের চেয়ে ইসলাম ধর্মের প্রসার অনেক বেশি ঘটছে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে ২০৭০ সালে ইসলাম বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্মে পরিণত হবে।

বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যায় বাড়ছে না। যেসব দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যায় বেশি, সেসব দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং জন্মহার স্থিতিশীল রয়েছে। যেমন চীন, জাপান ও থাইল্যান্ড।

কোনো ধর্ম অনুসরণ করে না-এমন মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ২০৫০ সালে তাঁদের হার হবে মোট জনগোষ্ঠীর ১৩ দশমিক ২ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫

১ এপ্রিল


বাংলাদেশ ৯০ শতাং
মুসলিমের দেশ হলেও আমরা মুসলিমরা আমাদের
ইতিহাস, ঐতিহ্য, চরিত্র, ধর্ম ও সংস্কৃতি
সবকিছুই যেন ভুলে গেছি! মুসলিম হিসেবে কী
করণীয় তা খুঁজে দেখি না। এক কথায় বিবেকের
দায়বদ্ধতা নেই বললেই চলে। জ্ঞান চর্চা না
করে চরিত্রহীনদের অনুকরণের ওপর নির্ভরশীল
হয়ে পড়ছি। তার একটি দৃষ্টান্ত হলো ‘এপ্রিল
ফুল’ উদযাপন করা। এপ্রিল ফুল শব্দের অর্থ,
দিবসের সূচনাকাল, প্রেক্ষাপট, মুসলিমদের
সাথে এ দিবসের সম্পর্ক ইতিবাচক নাকি
নেতিবাচক, দিবসে কী কী করা হয়, করণীয়-
বর্জনীয় ও তথ্যের ভিত্তিসহ নানা দিক
আমাদের জানা দরকার। এসব কিছু জানার পর
তা মেনে চলাই জ্ঞানীর কাজ। এ দিবসের
প্রেক্ষাপট না জেনেই এর চর্চা করা হচ্ছে।
নিজেরা যেমন এ অপসংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে
পড়ছি তেমনি আমাদের সন্তানরাও অজ্ঞতাবশত
এ দিবসকে পালন করছে। এপ্রিল ফুল দিবসের
ইতিহাস যারা জানেন তারা এ দিবসটি পালন
করেন না বরং এ রকম একটি দিবস পালনকে বড়
ধরনের অন্যায় বলে স্বীকার করেন।
এবারে মূল কথায় আসা যাক। সাংস্কৃতিক কর্ম
হিসেবে কৌতুক করেই পালন করা হয় এপ্রিল
মাসের প্রথম দিনটি। এ দিবসটি এপ্রিল ফুল
নামে পরিচিত। এর অন্য নাম হলো অখখ
ঋঙঙখঝ’উঅণ। ফুল (ঋড়ড়ষ) একটি ইংরেজি
শব্দ। এর অর্থ বোকা। ইংরেজি এপ্রিল ফুলের
অর্থ এপ্রিলের বোকা। স্পেনের তৎকালীন
খ্রিস্টানরা মুসলিমদের বোকা বানিয়েছে বলেই
নামটি এ রকম। এপ্রিল ফুল সম্পর্কে কয়েকটি
বর্ণনা পাওয়া যায়। পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথার
প্রচলন থাকলেও সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে
পারে না। মুসলিমপিডিয়া, জুইস
এনসাইক্লোপিডিয়া ও অন্যান্য
এনসাইক্লোপিডিয়া ও ইতিহাস গ্রন্থের বরাতে
ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া সম্পাদিত
‘পহেলা এপ্রিল’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন,
স্পেনের অত্যাচারিত মানুষদের আহ্বানে সাড়া
দিয়ে মুসলিম বাহিনী ৯২ হিজরি মুতাবেক ৭১১
খ্রি. স্পেনে প্রবেশ করে। মুসলিমগণই
ইউরোপের মানুষদের জ্ঞানবিজ্ঞান শিক্ষা
দেন। মুসলিম স্পেনের গ্রানাডা, কর্ডোভা ও
অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা
পড়তে আসত। ৭১১-১৪৯২ খ্রি. পর্যন্ত প্রায়
আটশ বছর স্পেন, ফ্রান্স ও পর্তুগাল মুসলমানরা
শাসন করেছিল। এটি ছিল মুসলমানদের জন্য
স্বর্ণযুগ। শেষ দিকে তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ
কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিমরা কুরআন-সুন্নাহ
ভুলে গিয়ে দুনিয়ার মায়ায় মত্ত হয়ে নেতার
নির্দেশ অমান্য করায় পারস্পরিক শত্রুতা বেড়ে
গেল। তখনই তারা স্পেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।
ফলে খ্রিস্টানরা ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন অঞ্চল
মুসলিমদের থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে সক্ষম
হয়।
আজ থেকে ৫২২ বছর আগে মুসলিম অধ্যুষিত ৮৯৮
হিজরি মোতাবেক ১৪৯৩ খ্রি. রাজা
ফার্দিনান্ড ও রানী ঈসাবেলার যৌথ উদ্যোগে
মুসলিমদের শেষ রাজধানী গ্রানাডা দখল করতে
সক্ষম হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য,
চিকিৎসা, রাজনীতি, স্থাপত্য, শিল্প ও
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখে মুসলমানদের ক্ষতি
করার জন্য রাজা ফার্দিনান্ড এক ভয়ঙ্কর ফন্দি
আঁটলো। মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হলো।
মুসলমানরা রাজা-রানীর কাছে আত্মসমর্পণ
করলেন। এমতাবস্থায় ফার্দিনান্ড ঘোষণা
করেছিল, যারা মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নেবে
তাদের নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া হবে। তার
ঘোষণায় চল্লিশ হাজার মুসলমান আত্মবিশ্বাসী
হয়ে গ্রানাডার বিভিন্ন মসজিদে আশ্রয় নিলেও
তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। মসজিদের দরজাগুলো
বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে মসজিদের
মেঝেতে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে
মুসলিমদের হত্যা করেছিল রাজা ফার্দিনান্ড।
ঐতিহাসিক এক বর্ণনা মতে তিন দিন পর্যন্ত
হত্যাকা-ের উৎসব চলেছিল। মসজিদের
বাহিরেও অসংখ্য মুসলিমকে আগুনে পুড়িয়ে,
পাহাড় থেকে ফেলে, সমুদ্রের মধ্যে জাহাজ
ডুবিয়ে ও গণজবাই করে হত্যা করা হয়।
অনেককে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়। অথচ
মুসলমানরা এ রকম একটি অবস্থার জন্য প্রস্তুত
না থাকায় তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে। সেদিন খ্রিস্টানগুরুর আদেশে জ্ঞান-
বিজ্ঞানের মূল সূত্র লক্ষ লক্ষ আরবি পুস্তক
পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। শুধু মুসলিমগণ নয়,
ইয়াহুদীদের উপরও খ্রিস্টানগণ একই রূপ
অত্যাচার করে। এ সময়ে রাজা ফার্দিনান্ড
উপহাস করে বলেছিল, হায় মুসলমান! তোমরা
হলে এপ্রিলের বোকা। মুসলিমদের মিথ্যা
আশ্বাসের মাধ্যমে বোকা বানানোর সময়কে
স্মরণীয় করে রাখতে এপ্রিল ফুল পালন করা হয়।
অবশেষে খ্রিস্টানরা কর্ডোভার সেই
ঐতিহাসিক মসজিদটিকে গীর্জায় পরিণত
করেছে। মসজিদের ভেতরে দরজা ও জানালার
ফাঁকে ফাঁকে মূর্তি স্থাপন করেছে। এভাবেই
মুসলিম ঐতিহ্যকে ধ্বংস করা হয়েছে। এ ঘটনা
ছাড়া আরো দুটি ঘটনার কথা উইকিপিডিয়াতে
উল্লেখ থাকলেও বর্ণিত ঘটনাটিই সবচেয়ে
বেশি প্রসিদ্ধ বলে ঐতিহাসিকরা মত প্রকাশ
করেছেন।
এপ্রিল ফুল দিবসটি পালনের সাথে মুসলিমদের
দূরতম সম্পর্ক নেই। এটি নেতিবাচক একটি
কাজ। পহেলা এপ্রিল তারিখটি আসলে মিথ্যা,
ধোঁকা ও প্রতারণার ব্যাপক চর্চা করতে দেখা
যায়। এ মিথ্যা চর্চা থেকে বাদ যায় খুব
কমসংখ্যক মানুষ। ছোট-বড়, ছাত্র-ছাত্রী,
নারী-পুরুষ সবাই না  জেনেই জড়িয়ে পড়ে এর সাথে""""""""""""?