স্বাধীনতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
স্বাধীনতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৬

ঘুম যদি কম হয়

কারও হয়তো রাতে ভালো ঘুম হয় না। কেউ সারা রাত জেগে কাজ করেন বা ফেসবুক নিয়ে থাকেন। কেউ অনেক রাত জেগে টিভি দেখেন। কারও কারও হয়তো পেশাগত কাজটাই রাতে। দিনের পর দিন এ রকম ঘুমের স্বল্পতা আপনার ক্ষতি করতে পারে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নির্ঘুমতা আপনার শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা তৈরি করতে পারে।
ঘুম অবশ্য নির্ভর করে বয়স, কাজের ধরন ইত্যাদির ওপর। যেমন ছোট শিশুরা দিনে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুমায়। কিশোর-তরুণদের দিনে সাড়ে আট থেকে সাড়ে নয় ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা বা সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা হতে পারে এই সময়।
এখন দিনের পর দিন এই ঘুমের সময়টা ওলটপালট হলে তার প্রভাব পড়ে দেহ-মনে। ধারাবাহিক ঘুমের স্বল্পতা মানুষের স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়, বিষণ্নতায় আক্রান্ত করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে। ঘুমস্বল্পতা চলতে থাকলে ব্যথা-বেদনার অনুভূতিতে পরিবর্তন আসে। ফলে অল্পতে বেশি ব্যথা হয়। প্রভাব পড়ে হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতায়ও। দৈনন্দিন কাজেও মনোযোগ কমে গিয়ে দক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। তাই কম ঘুমিয়ে রাত কাটানো বন্ধ করুন।
ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন
মেডিসিন বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খাওয়া উচিত?
উত্তর: কোষ্ঠকাঠিন্যে ইসবগুলের ভুসি-জাতীয় খাবারের উপকারিতা হচ্ছে এগুলো উচ্চ আঁশযুক্ত, তাই অন্ত্রে হজম হয় না এবং মলত্যাগ করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে ভিজিয়ে না রেখে পানিতে গুলে সঙ্গে সঙ্গেই পান করা ভালো।
আখতারুন নাহার
প্রধান পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল
স্বাস্থ্যবটিকা ® ব্রোন স্মিথ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের জোর কতটা কমে?
৬৫ বছর বয়সের শুরুতে নারীদের হাতের শক্তি বছরে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে কমে। আর পুরুষেরা এই সামর্থ্য হারান ৩ থেকে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। বয়স ৮০ পেরোলে হাতের শক্তি আরও দ্রুত কমতে থাকে। মুঠোর দৃঢ়তা বজায় রাখতে কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
তুমি এটা খুলে দেবে?
দুঃখিত, আমি ৬৫ পেরিয়ে গেছি
‘স্বাস্থ্যবটিকা’র লক্ষ্য রোগনির্ণয় গোছের কিছু নয়

শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫

রাজধানীর ভাটারায় হামলা বোমাবাজির পর গ্রেপ্তার ২ ছাত্রলীগ নেতা

গতকাল রাতে রাজধানীর ভাটারার জগন্নাথপুর এলাকায় গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা। ছবি : কালের কণ্ঠ
অ- অ অ+

রাজধানীর ভাটারায় দলবল নিয়ে হামলা ও বোমাবাজির পর ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। তাঁদের কাছ থেকে চাপাতিসহ দেশি কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভাটারার জগন্নাথপুর আজিজ সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর এলাকার ব্যবসায়ী ও লোকজন বিক্ষোভ করেছে। তাদের অভিযোগ, একটি হোটেলের মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ছাত্রলীগের এই দুই নেতা লোকজন নিয়ে ওই হোটেল ও এলাকার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মাহমুদুল হাসান অঞ্জন ও সাবেক সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া।

ভাটারা থানার ওসি নূরুল মুত্তাকিন দুজনকে গ্রেপ্তার ও দেশি অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিসমিল্লাহ নামের খাবার হোটেলটির মালিক বিলায়েত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, গত রবিবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান অঞ্জন ও জিয়াউল হক জিয়ার নেতৃত্বে কমপক্ষে ৩০ জন তাঁর হোটেলে এসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে না চাইলে পরের দিন আসবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। এরপর গত সোমবার তাদের পক্ষে উঠতি বয়সী সাত-আটজন কিশোর এসে তাঁর কাছে আবার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় কিশোররা তাঁকে মারধর করে। তখন তাঁর চিত্কারে স্থানীয় লোকজন এসে ওই কিশোরদের আটক করে। পরে তাদের স্থানীয় বাড়ি মালিক সমিতি 'জগন্নাথপুর সোসাইটির' কার্যালয়ে নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে বিচার বসে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

মালিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা অঞ্জন ও জিয়ার নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন মিছিল করে 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে বিসমিল্লাহ হোটেলসহ এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। তারা বাড়ি মালিক সমিতির কার্যালয়েও হামলা চালায়। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে মসজিদের মাইক থেকে হামলার বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানানো হয়। এরপর  স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের আটক করার চেষ্টা করে। তখন হামলাকারীরা ককটেল ফাটিয়ে পিছু হটে। কিন্তু ধরা পড়ে যান অঞ্জন ও জিয়া। পরে পুলিশ ডেকে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়।

গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গ্রেপ্তারকৃত জিয়া ও অঞ্জন বিএনপির সময় ছাত্রদল করত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা হয়েছে।

অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি থেকে নির্বাচিত সিনেটর ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী র‍্যান্ড পল তাঁর বিবেচনায় ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ ৩২টি দেশ থেকে উদ্বাস্তু গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে একটি প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করেছেন। এই খসড়া আইনে যে ৩২টি দেশকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সব মুসলিমপ্রধান দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

‘উদ্বাস্তু আগমন আইনের আওতায় জঙ্গিদের আগমন বন্ধ করো’-এ শিরোনামের খসড়া আইনটিতে উদ্বাস্তু বাছাইয়ের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে ছয়টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। যেমন- আবেদনকারীর ব্যক্তিগত ইতিহাস, তাঁর কার্যাবলির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। এই ছয়টি শর্ত পুরোপুরি পালিত হয়েছে মর্মে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর থেকে নিশ্চয়তা প্রদানের পরই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিনেটর পল দাবি করেছেন, সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা এড়াতে সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্দেশ্যেই তিনি এই প্রস্তাব করেছেন।

শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)
বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে কালজয়ী চিরন্তন আদর্শ হিসেবে একমাত্র ইসলামই সব যুগে মানবসমাজে মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। দুনিয়াবাসীর কাছে সর্বপ্রথম মানবাধিকারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক অবস্থায় নবদীক্ষিত মুসলমানদের জীবনে যে অমানবিক অত্যাচার ও নিপীড়ন নেমে এসেছিল, তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছিল। আরবের কাফির-মুশরিকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানবতার মূর্ত প্রতীক নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করেন। এত অত্যাচার সত্ত্বেও ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) সবাইকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জগদ্বাসীর সামনে উপস্থাপন করে রেখেছেন।

সভ্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণার সূত্রপাত

পাশ্চাত্য সভ্যতায় প্রথম মানবাধিকারের ধারণার জন্ম হয় খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে প্রথম ঘোষিত হয় Declaration of the People’s Right এবং ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন সংবিধানে সংযোজিত হয় The Bill of Rights.এর পর থেকেই পাশ্চাত্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণাটি বিকশিত হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ববাসী এ বিষয়ে আরো সচেতন হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ৩০ ধারাসংবলিত সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বটে; কিন্তু কোনো রাষ্ট্রের ওপর এই সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

ফিতরাত তথা স্বভাবধর্ম ইসলাম মানবজীবনের জন্য উপযোগী আদর্শ পেশ করেছে। ইসলামে মানবাধিকার জীবনের সব দিক ও বিভাগে সমভাবে ব্যাপৃত। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবামূলক মৌলিক চাহিদাকেও ইসলাম মানবাধিকারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। জীবনরক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক তথা সব ক্ষেত্রে উপরোক্ত মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বজনীন মানবাধিকারের মাইলফলক মহানবী (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণে তা স্পষ্ট। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘হে মানবজাতি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক। তোমাদের পিতা হজরত আদম (আ.) এক। সাবধান! ‘অনারবের’ ওপর ‘আরবের’ কিংবা ‘আরবের’ ওপর ‘অনারবের’, শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর কৃষ্ণাঙ্গদের কিংবা কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর শ্বেতাঙ্গ মানুষের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।”

ইসলামে মানুষের নিরাপত্তা

ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। মহান স্রষ্টা প্রাণ দানের মাধ্যমে মানবজীবনকে যেমন সম্মানিত করেছেন, তেমনি জীবন হরণকে করেছেন নিষিদ্ধ। শরিয়তে কেবল বিচারকের রায়ের মাধ্যমে কারো জীবন সংহার স্বীকৃত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা কোরো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৩)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ‘নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়েদা : ৩২)

সম্পদ ও সম্ভ্রম রক্ষার অধিকার

ইসলাম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেয় এবং বৈধ উপায়ে উপার্জিত সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে। বৈধ উপার্জনের অধিকার, তার মালিকানা রক্ষা, হস্তান্তর, দান এবং তা ভোগ করার অধিকার ইসলাম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা বাকারা : ১২৮)

অন্যদিকে প্রত্যেক নাগরিকের ইজ্জত-আবরু রক্ষার গ্যারান্টি দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মানুষের মর্যাদাহানি, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নিন্দা, কুৎসা রটানো, বিদ্রূপ ও উপহাস করা, নাম ও উপাধি বিকৃত করাকে নিষিদ্ধ করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রূপ না করে।’ (সুরা হুজুরাত : ১১) এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের কাছে পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস।’ (সহিহ বুখারি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ. ৬৩২)

ইসলাম ও ব্যক্তিস্বাধীনতা

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় নিশ্চয়তা। যেকোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ইসলামী নীতি অনুযায়ী কোনো উপযুক্ত আদালতে আইনানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, আটক বা বল প্রয়োগ করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সমান সুযোগ থাকবে। বিচার কার্যক্রমে এ ন্যায়নীতি অনুসরণের ব্যাপারে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ—‘তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তা করবে।’ (সুরা নিসা : ৫৮) এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ থাকবে।’ (ড. ম. ই পাটোয়ারী ও মো. আখতারুজ্জামান, মানবাধিকার ও আইনগত সহায়তাদানের মূলনীতি, পৃ. ৫)

নারীর অধিকার

নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামই সর্বপ্রথম বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, সম্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। স্ত্রীর প্রতি আচরণ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।’ (সুরা বাকারা : ২২৮)

ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত ঘোষণা করে নারীর মর্যাদা সমুন্নত করেছে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অধিকারেরও স্বীকৃতি দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘তোমরা তা কামনা কোরো না, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো ওপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, পুরুষদের জন্য রয়েছে ওই অংশ, যা তাদের অর্জন, আর নারীদের জন্যও ওই অংশ, যা তাদের অর্জন।’ (সুরা নিসা  : ৩২)

সংখ্যালঘুদের অধিকার

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের ন্যায়সংগত অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি, ইজ্জত-সম্মান, চাকরি ইত্যাদির নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। মদিনা সনদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মদিনায় বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও বাকি অংশের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হয়নি। অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাস্যদের নিন্দাবাদ ও গালমন্দকে কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এভাবে—‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে, তাদের উপাস্যদের তোমরা গালাগাল কোরো না।’ (সুরা আনআম : ১০৮) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের মতোই এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’ রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘সাবধান! যদি কেউ কোনো মুআহিদের (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক) প্রতি জুলুম করে বা তাকে তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা সাধ্যাতিরিক্ত কোনো কাজ তার ওপর চাপিয়ে দেয় অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে কোনো মালামাল নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে থাকব।’ (আবু দাউদ, মিশকাত পৃ. ৩৫৪) মূলত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান  Charter of Madina-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি; বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

মাদারীপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

আজ বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) মাদারীপুর জেলা শাখার আয়োজনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে এদিন বিকেল ৩টায় স্বাধীণতা অঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপরে এম এম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরীতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তৃতা করেন সরকারী নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিতেন চন্দ্র মন্ডল, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার হাসান আলী, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ।