দেশের খবর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
দেশের খবর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৬

স্প্রে করলেই হাতের মুঠোয় প্রেমিকা!

বশীকরণ বা জাদুটোনা নয়। এমনকী, মধ্যযুগের ইউরোপের ‘লাভ-পোশন’ও নয়। এটি নেহাতই নিরীহ একটি নেজাল-স্প্রে। আর এর গন্ধেই কুপোকাত হয়ে যেতে পারেন বড় বড় সুন্দরী।

জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন এই বিশেষ নেজাল স্প্রে অক্সিটোসিন হরমোনের এক কৃত্রিম রূপান্তর। এই হরমোনকে সাধারণত ‘লাভ হরমোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। মানুযের প্রেমে পড়ার প্রবৃত্তির মূলে নাকি কাজ করে থাকে এই হরমোনটিই।

এই নেজাল-স্প্রে পরীক্ষামূলকভাবে ৪৬ জন নারীর ওপরে প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, তাঁরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীর প্রতি তীব্র প্রেম অনুভব করেছেন। এই নারীদের বয়স ২০-র কোঠায়।

কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। যে সব নারী জন্মনিয়ন্ত্রক পিল ব্যবহার করেন, তাঁদের ওপরে কোনও প্রভাবই ফেলেনি এই স্প্রে। অতএব, সাধু সাবধান!

পুকুরে গলদা চিংড়ি ও মাছের মিশ্রচাষ

গলদা চিংড়ি

বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। জাতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং সর্বোপরি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান সমপ্রসারিত করার সুযোগ আরও ব্যাপক। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা রফতানি বাণিজ্যে মৎস্য খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে চিংড়ি। কেননা গলদা চিংড়ি বর্তমানে দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। বিশ্বব্যাপী গলদা চিংড়ির ক্রমবর্ধমান চাহিদা, স্বাদ এবং মূল্যের কারণে বাংলাদেশে এর চাষ দ্রুত সমপ্রসারিত হচ্ছে। এদেশে ৩৬ প্রজাতির সামুদ্রিক ও ২৪ প্রজাতির মিঠা পানির চিংড়ি রয়েছে। লবণাক্ততার কারণে সামুদ্রিক চিংড়ি দেশের উপকূলীয় এলাকা ছাড়া অন্যত্র চাষ করা যায় না। কিন্তু মিঠা পানির চিংড়ি দেশের সব জায়গায় চাষ করা সম্ভব, এমনকি অল্প লবণাক্ত পানিতেও মিঠা পানির চিংড়ি চাষ করা যায়। মিঠা পানির সর্ববৃহৎ চিংড়ি প্রজাতি হচ্ছে গলদা চিংড়ি। আমাদের দেশে আবহাওয়া ও পানির গুণগতমান গলদা চিংড়ি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। গলদা চিংড়ির চাষ বৃদ্ধি পেলে যেমন কর্মসংস্থান ও আমিষের যোগান বাড়বে তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার আয় ও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু কার্প জাতীয় এবং অন্যান্য মাছ থেকে চিংড়ির জীবনযাপন ও চাষ পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় চিংড়ি চাষের জন্য কৃষকদের কারিগরি জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এজন্য অনেক মৎস্য চাষি চিংড়ি চাষে সফলতা অর্জন করতে পারে না।

গলদা চিংড়ি ও মাছের মিশ্র চাষের সুবিধা :
১. গলদা চিংড়ি মিশ্রচাষে খাদ্য এবং বাসস্থানের জন্য মাছ ও চিংড়ি কেউ কারও প্রতিযোগিতা করে না।
২. পুকুরে প্রতিটি স্তরের খাদ্যের যথাযথ ব্যবহার হয়।
৩. চিংড়ির বাজার দর বেশি হওয়ায় তুলনামুলকভাবে কার্প জাতীয় মাছের সাথে মিশ্রচাষ অধিক লাভজনক।
৪. গলদা চিংড়ির মিশ্রচাষে প্লাংকটনের আধিক্যের জন্য পানির গুণগতমান নষ্ট হয় না।

মিশ্র চাষের জন্য পুকুর তৈরি:
গলদা চিংড়ি চাষের জন্য পুকুর তৈরির সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে:
১. খামারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিষ্কাশন ও সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. পুকুর পাড়ের আবেষ্টনী বন্যার পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা হতে প্রায় দেড় ফুট উঁচু হতে হবে, মাথা চওড়া এবং ঢাল এঁটেল অথবা দো-আঁশ হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কাঁকড়া, ইঁদুর বা অন্যান্য প্রাণী দ্বারা গর্ত করতে না পারে।
৩. সূর্যের আলো কমপক্ষে ৮ ঘন্টা থাকতে হবে। কেননা আলো ছাড়া পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় না। খোলামেলাভাবে বাতাস চলাচল না করলে অক্সিজেনের অভাব হবে এবং গলদা ও মাছের রোগ আক্রমণের আশংকা বেড়ে যাবে।
৪. পাড়ের নিচে বকচর থাকলে পাড় কম ভাঙ্গবে, বকচরের উপর খাদ্য দেয়া যাবে, বকচরের উপর দাঁড়িয়ে হররা ও জাল টানা সহজ হবে।
৫. পানির সুব্যবস্থার জন্য মটর কিংবা শেলো মেশিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. পুকুরের তলদেশ সমান হলে জাল টানা ও মাছ ধরা সহজ হবে।
৭. জলাশয়ে পানির গভীরতা ৩ থেকে ৪ ফুট হবে এবং বেশি গভীর হলে উৎপাদন কমে যাবে।
৮.পানির আগমন ও নির্গমন মুখে অবশ্যই প্রতিবন্ধক স্থাপন করতে হবে।
৯. ভাল উৎপাদন পাওয়ার জন্য আগাছা পরিষ্কার করা আবশ্যক।
১০. অবাঞ্চিত কিছু যাতে না থাকে তার জন্য পুকুর শুকিয়ে এবং বিষ প্রয়োগ যেমন, রোটেনন পাউডার, চা বীজের খৈল, ক্যালসিয়াম কারবাইড ইত্যাদি ব্যবহার করে দূর করতে হবে।
১১. চুন প্রয়োগ করে মাটি ও পানির অম্লত্ব নিরপেক্ষ রাখতে হবে।
১২. পরিমিত মাত্রায় সার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. প্রাকৃতিক খাদ্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
১৪. পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা করতে হবে।
১৫. খোলস বদলের সময় আশ্রয়স্থল স্থাপন করতে হবে।

গলদা চিংড়ি উৎপাদনে পানির সবচেয়ে উপযুক্ত গুণাগুণগুলো হলঃ তাপমাত্রা ২৫-৩১ ডিগ্রী সে. দ্রবীভূত অক্সিজেন ৫ পিপিএম তর্দুধ্ব, লবণাক্ততা ০-৮ পিপিটি, সামগ্রিক ক্ষারত্ব ১০০-১৬০ পিপিএম, সমাগ্রিক খরতা ১০০ পিপিএম এর নিচে, আন-আয়োনাইজড এ্যামোনিয়া ০.০১ পিপিএম এর কম, হাইড্রোজেন সালফাইডের অনুপস্থিতি এবং লৌহ ১ পিপিএম এর কম।

গলদার খাদ্য উপাদান:
গলদা চিংড়ির সম্পূরক খাদ্য তৈরির জন্য খাদ্যোপাদান এমনভাবে বাছাই করতে হবে যাতে সেগুলোতে আমিষ, স্নেহ, শর্করা, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ প্রয়োজনীয় পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। গলদা চিংড়ির খাদ্য তৈরিতে সচরাচর ব্যবহারযোগ্য উপাদানগুলো হল : ফিশ মিল, রেশমকীট মিল, চিংড়ির গুঁড়া, শামুকের মাংস, কাঁকড়ার গুঁড়া, সয়াবিন খৈল, সরিষার খৈল, ভুট্রা, চালের কুঁড়া, গমের ভুষি, আটা, চিটাগুড়, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ ইত্যাদি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক বলেন, রুই জাতীয় ও অন্যান্য মাছ থেকে চিংড়ির জীবনযাপন ও চাষ পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ায় চিংড়ি চাষে চাষিদের পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞানের অভাবে অনেকে চিংড়ি চাষে লাভবান হতে পারে না। ফলে তারা চিংড়ি চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। তাই পুকুরে গলদা ও মাছের মিশ্রচাষ সম্পর্কিত লেখাটি মৎস্য চাষিভাইদের সহযোগী হবে বলে আশা করি এবং এভাবে পুকুরে গলদা চিংড়ি ও মাছের মিশ্রচাষ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৬

ঘুম যদি কম হয়

কারও হয়তো রাতে ভালো ঘুম হয় না। কেউ সারা রাত জেগে কাজ করেন বা ফেসবুক নিয়ে থাকেন। কেউ অনেক রাত জেগে টিভি দেখেন। কারও কারও হয়তো পেশাগত কাজটাই রাতে। দিনের পর দিন এ রকম ঘুমের স্বল্পতা আপনার ক্ষতি করতে পারে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নির্ঘুমতা আপনার শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা তৈরি করতে পারে।
ঘুম অবশ্য নির্ভর করে বয়স, কাজের ধরন ইত্যাদির ওপর। যেমন ছোট শিশুরা দিনে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুমায়। কিশোর-তরুণদের দিনে সাড়ে আট থেকে সাড়ে নয় ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা বা সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা হতে পারে এই সময়।
এখন দিনের পর দিন এই ঘুমের সময়টা ওলটপালট হলে তার প্রভাব পড়ে দেহ-মনে। ধারাবাহিক ঘুমের স্বল্পতা মানুষের স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়, বিষণ্নতায় আক্রান্ত করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে। ঘুমস্বল্পতা চলতে থাকলে ব্যথা-বেদনার অনুভূতিতে পরিবর্তন আসে। ফলে অল্পতে বেশি ব্যথা হয়। প্রভাব পড়ে হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতায়ও। দৈনন্দিন কাজেও মনোযোগ কমে গিয়ে দক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। তাই কম ঘুমিয়ে রাত কাটানো বন্ধ করুন।
ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন
মেডিসিন বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খাওয়া উচিত?
উত্তর: কোষ্ঠকাঠিন্যে ইসবগুলের ভুসি-জাতীয় খাবারের উপকারিতা হচ্ছে এগুলো উচ্চ আঁশযুক্ত, তাই অন্ত্রে হজম হয় না এবং মলত্যাগ করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে ভিজিয়ে না রেখে পানিতে গুলে সঙ্গে সঙ্গেই পান করা ভালো।
আখতারুন নাহার
প্রধান পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল
স্বাস্থ্যবটিকা ® ব্রোন স্মিথ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের জোর কতটা কমে?
৬৫ বছর বয়সের শুরুতে নারীদের হাতের শক্তি বছরে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে কমে। আর পুরুষেরা এই সামর্থ্য হারান ৩ থেকে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। বয়স ৮০ পেরোলে হাতের শক্তি আরও দ্রুত কমতে থাকে। মুঠোর দৃঢ়তা বজায় রাখতে কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
তুমি এটা খুলে দেবে?
দুঃখিত, আমি ৬৫ পেরিয়ে গেছি
‘স্বাস্থ্যবটিকা’র লক্ষ্য রোগনির্ণয় গোছের কিছু নয়

শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

রণবীরের সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি : দীপিকা

রণবীরের সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি : দীপিকা

কথাটি বলেছেন কাপুর নয়, সিং-কে নিয়ে। দুই রণবীরের প্রেয়সী। একজনের 'এক্স'। তাতে কী! যখন খোলা মনের খোলা জবাবের প্রসঙ্গ আসে, দীপিকা একেবারে অন্য মানুষ। যাকে বলে স্ট্রেট ফ্রম দ্য হার্ট। সম্প্রতি আসন্ন ছবি 'বাজিরাও মস্তানি' ছবির প্রোমোশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের এমনই খোলা মনে উত্তর দিলেন সুন্দরী।
দীপিকা বলেন, 'রণবীর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। এর সঙ্গে আমার বিশেষ কথা বলার প্রয়োজন হয় না। আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং লেভেল এতটাই ভালো, আমরা শুধু একে অপরের দিকে তাকাই আর বুঝে যাই আমরা কী চাই। সিনেমার ক্ষেত্রেও এটা খুব ভালো কাজ করে। ওর সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি। আমার এতটাই বিশ্বাস আছে ওঁর ওপর। আমি জানি ও আমায় কোনও দিন আঘাত করবে না। এ জন্য আমি ওকে ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি।'
দিন কয়েক আগেও এমনভাবেই রণবীর কাপুরের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'আমি অনুমতি না দিলে ও বিয়েই করতে পারবে না।' বছর খানেক আগে একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো-তে এসে সদ্য ব্রেক আপ হওয়া রণবীর সম্পর্কে দীপিকার মন্তব্য ছিল চমকে দেওয়ার মতো। তিনি বলেন, 'ও (রণবীর কাপুর) তো কন্ডোমের বিজ্ঞাপন করতে পারে। ওগুলো ব্যবহার করতে খুব ভালোবাসে কিনা!'
তবে দুই রণবীরের মধ্যে তুলনা টানতে নারাজ তিনি। দীপিকার মতে দু' জনে দু' রকম। ফলে তুলনা টানা ভুল হবে। তবে কেমিস্ট্রি যে দু'জনের সঙ্গেই জমপেশ হয় সে নিয়ে তর্কের কোনও জায়গা নেই। 'রামলীলা' বা 'ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি'তে দুই রণবীরের বাহুলগ্না হয়ে দর্শকদের মনেই নয়, ব্লকবাস্টারেও জায়গা করে নিয়েছেন এ মুহুর্তে বলিউডের এক নম্বর অভিনেত্রী।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)
বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে কালজয়ী চিরন্তন আদর্শ হিসেবে একমাত্র ইসলামই সব যুগে মানবসমাজে মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। দুনিয়াবাসীর কাছে সর্বপ্রথম মানবাধিকারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক অবস্থায় নবদীক্ষিত মুসলমানদের জীবনে যে অমানবিক অত্যাচার ও নিপীড়ন নেমে এসেছিল, তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছিল। আরবের কাফির-মুশরিকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানবতার মূর্ত প্রতীক নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করেন। এত অত্যাচার সত্ত্বেও ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) সবাইকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জগদ্বাসীর সামনে উপস্থাপন করে রেখেছেন।

সভ্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণার সূত্রপাত

পাশ্চাত্য সভ্যতায় প্রথম মানবাধিকারের ধারণার জন্ম হয় খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে প্রথম ঘোষিত হয় Declaration of the People’s Right এবং ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন সংবিধানে সংযোজিত হয় The Bill of Rights.এর পর থেকেই পাশ্চাত্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণাটি বিকশিত হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ববাসী এ বিষয়ে আরো সচেতন হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ৩০ ধারাসংবলিত সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বটে; কিন্তু কোনো রাষ্ট্রের ওপর এই সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

ফিতরাত তথা স্বভাবধর্ম ইসলাম মানবজীবনের জন্য উপযোগী আদর্শ পেশ করেছে। ইসলামে মানবাধিকার জীবনের সব দিক ও বিভাগে সমভাবে ব্যাপৃত। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবামূলক মৌলিক চাহিদাকেও ইসলাম মানবাধিকারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। জীবনরক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক তথা সব ক্ষেত্রে উপরোক্ত মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বজনীন মানবাধিকারের মাইলফলক মহানবী (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণে তা স্পষ্ট। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘হে মানবজাতি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক। তোমাদের পিতা হজরত আদম (আ.) এক। সাবধান! ‘অনারবের’ ওপর ‘আরবের’ কিংবা ‘আরবের’ ওপর ‘অনারবের’, শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর কৃষ্ণাঙ্গদের কিংবা কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর শ্বেতাঙ্গ মানুষের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।”

ইসলামে মানুষের নিরাপত্তা

ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। মহান স্রষ্টা প্রাণ দানের মাধ্যমে মানবজীবনকে যেমন সম্মানিত করেছেন, তেমনি জীবন হরণকে করেছেন নিষিদ্ধ। শরিয়তে কেবল বিচারকের রায়ের মাধ্যমে কারো জীবন সংহার স্বীকৃত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা কোরো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৩)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ‘নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়েদা : ৩২)

সম্পদ ও সম্ভ্রম রক্ষার অধিকার

ইসলাম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেয় এবং বৈধ উপায়ে উপার্জিত সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে। বৈধ উপার্জনের অধিকার, তার মালিকানা রক্ষা, হস্তান্তর, দান এবং তা ভোগ করার অধিকার ইসলাম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা বাকারা : ১২৮)

অন্যদিকে প্রত্যেক নাগরিকের ইজ্জত-আবরু রক্ষার গ্যারান্টি দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মানুষের মর্যাদাহানি, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নিন্দা, কুৎসা রটানো, বিদ্রূপ ও উপহাস করা, নাম ও উপাধি বিকৃত করাকে নিষিদ্ধ করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রূপ না করে।’ (সুরা হুজুরাত : ১১) এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের কাছে পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস।’ (সহিহ বুখারি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ. ৬৩২)

ইসলাম ও ব্যক্তিস্বাধীনতা

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় নিশ্চয়তা। যেকোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ইসলামী নীতি অনুযায়ী কোনো উপযুক্ত আদালতে আইনানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, আটক বা বল প্রয়োগ করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সমান সুযোগ থাকবে। বিচার কার্যক্রমে এ ন্যায়নীতি অনুসরণের ব্যাপারে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ—‘তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তা করবে।’ (সুরা নিসা : ৫৮) এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ থাকবে।’ (ড. ম. ই পাটোয়ারী ও মো. আখতারুজ্জামান, মানবাধিকার ও আইনগত সহায়তাদানের মূলনীতি, পৃ. ৫)

নারীর অধিকার

নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামই সর্বপ্রথম বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, সম্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। স্ত্রীর প্রতি আচরণ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।’ (সুরা বাকারা : ২২৮)

ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত ঘোষণা করে নারীর মর্যাদা সমুন্নত করেছে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অধিকারেরও স্বীকৃতি দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘তোমরা তা কামনা কোরো না, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো ওপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, পুরুষদের জন্য রয়েছে ওই অংশ, যা তাদের অর্জন, আর নারীদের জন্যও ওই অংশ, যা তাদের অর্জন।’ (সুরা নিসা  : ৩২)

সংখ্যালঘুদের অধিকার

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের ন্যায়সংগত অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি, ইজ্জত-সম্মান, চাকরি ইত্যাদির নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। মদিনা সনদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মদিনায় বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও বাকি অংশের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হয়নি। অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাস্যদের নিন্দাবাদ ও গালমন্দকে কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এভাবে—‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে, তাদের উপাস্যদের তোমরা গালাগাল কোরো না।’ (সুরা আনআম : ১০৮) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের মতোই এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’ রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘সাবধান! যদি কেউ কোনো মুআহিদের (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক) প্রতি জুলুম করে বা তাকে তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা সাধ্যাতিরিক্ত কোনো কাজ তার ওপর চাপিয়ে দেয় অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে কোনো মালামাল নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে থাকব।’ (আবু দাউদ, মিশকাত পৃ. ৩৫৪) মূলত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান  Charter of Madina-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি; বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

BD News

বিডি নিউজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আলোকিত নাম, বাংলাদেশের জাতিয় মাধ্যম গুলি জখন সৈরাচার শাসক এর দখলে, তখনি সত্যর বানি নিয়ে হাজির বিডি নিউজ, এটি সুদখ্য  সম্পাদক দারা পরিচালিত, সারা বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা সব খবর সাথে সাথে প্রচার করা হয়, দেশের বাহিরেও রয়েছে অসংখ্য সাংবাদিক, তারা প্রতি মুহূর্তেই আপডেট দিয়ে থাকেন প্রবাসের খবর, বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ার শুধুমাত্র বিডি নিউজেই রয়েছে ২৪ ঘন্টা অনলাইন,
আপনার যেকোনো খবর আমাদের পেজে প্রচার করতে যোগাযোগ করুন Facebook page