মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, এমন অভিযোগে বিরোধীজোট বিএনপি ও জামায়াতরে এক ডজন নেতার বিচার করছে

৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, এমন অভিযোগে বিরোধীজোট বিএনপি ও জামায়াতরে এক ডজন নেতার বিচার করছে



আওয়ামী লীগ সরকার। তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের কথিত স্বপক্ষ শক্তি দাবি করে এ বিচার করলেও তাদের দলে থাকা রাজাকারদের ব্যাপারে একেবারে নিরব। এ



দলটিতেও রয়েছে, কুখ্যাত রাজাকার, আল বদর, আল শামস, গণহত্যকারী, গণধর্ষণকারী, অগ্নিসংযোগাকরীসহ অসংখ্য স্বাধীনতাবিরোধী। কিন্তু তারা রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় বক্তৃতায় বলেছেন, আওয়ামী লীগে রাজাকার থাকলে দেখিয়ে দেন-আমরা তাদের বিচার করব। আমাদের অনুসন্ধানে নিচে ২৩ আওয়ামী রাজাকারের তালিকা তুলে ধরা হলো।



আওয়ামী লীগের এই ২৩ জন যুদ্ধাপরাধী বা তাদের পরিবার কোন না কোনভাবে ৭১ সালে পাকিস্তান সরকার ও যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন। মক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এসব নেতা ঘৃণিত ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বনে গিয়েছে। ১৯৭১ সালে মক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন তারা।



নিচে আওয়ামী লীগের এসব যুদ্বাপরাধীর নাম ও তাদের কর্মকাণ্ডের কিছু তথ্য দেয়া হলো:



১. অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম: ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রাজাকার পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলামি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের শায়েস্তা করার জন্য তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয়। একই সঙ্গে তিনি রাজাকার, আল বদর ও আল শাসম বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি মু্ক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।



মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৬৯ সালে এ দেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন জোরদার হলে নেজামের ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার প্রচারণা চালানোর জন্য ‘নেজামে ইসলাম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। হাকিম অজিজুল ইসলাম এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। শেখ মজিবুর রহামনসহ পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে তিনি এ পত্রিকায় ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে প্রতি সপ্তাহে বিশেষ সম্পাদকীয় লিখেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় হন। এর মধ্যে দিয়ে রাজাকার



পরিবারের গন্ধ হতে মুক্ত হতে চান তিনি। তার ব্যাপারে ‌‌'মুক্তিযুদ্ধে ইসলামী দল' শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।



২. লে.কর্ণেল (অব) ফারুক খান: পর্যটন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর পক্ষে প্রথম অপারেশন চালান এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সুত্র: “দিনাজপুরের মক্তিযুদ্ধ” বই।



৩. ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন: ফরিদপুর– ৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যার জন্য হানাদার বাহিনীদের প্ররোচিত করেন। “ দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।



৪. অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন: ময়মনসিংহ ৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও



শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে গত বছরের ৪ এপ্রিল ট্রাইবুনাল ওয়ার ক্রাইম ফাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা, এম এ হাসানের দেয়া যুদ্ধাপরাধের তালিকায় (ক্রমিক নং-৭৩) উল্লেখ করা হয়েছে। যা গত ২২ এপ্রিল দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ দিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্বে গত ৬ এপ্রিল ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও জোড়বাড়িয়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ময়মনসিংয়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।



৫. সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী: আওয়মী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সংসদ উপনেতা ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর কাছে একজন আস্থাভাজন নেত্রী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে ৮৮ জনকে পাকিস্তানের সামরিক সরকার আস্থাভাজন এন এন এ মেম্বার অব ন্যাশনাল



এজেন্সী হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭১ সালে ৭ আগষ্ট পাকিস্তানের তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই তালিকায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম ছিল ৮৪ নম্বরে।



জেনারেল রোয়াদেদ খান ওই দিন ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন জানানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের



বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করার সুবাদে তিনি এ খ্যাতি অর্জন করেন বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে এ তথ্য উল্লেখ আছে।



৬. সৈয়দ জাফরউল্লাহ: আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। মাসিক “সহজকথা” আয়োজিত যুদ্ধাপরাধের বিচার:বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য



দিতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরঊল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। জাফর উল্লাহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পূর্ণ সমর্থন দেন। “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান ” বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।



৭. মুসা বিন শমসের: গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ করে ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন, শেখ সেলিম যে তার ছেলেকে ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসেরর মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন তার কথা কেউ



বলছেন না কেন? এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের বেয়াই। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে। তিনি নিরীহ বাঙ্গালীদের গণহত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্দ্ধাদের হত্যাসহ নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে জানা গেছে।



৮. মির্জা গোলাম কাশেম: জামালপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য, যুবলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা। ১৯৭১ সালে মির্জা কাশেম জামালপুরের মাদারগঞ্জে শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তিনি রাজাকার, আল-বদরদের গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। তার বিরুদ্ধে



নারী ধর্ষণ ও লুটপাটের একাধিক অভিযোগ আছে। যা “জামালপুরের মুক্তিযুদ্ধ ( “১৯৮১ সালের সংস্বকরণ” বইয়ে উল্লেখ আছে। মির্জা কাশেম জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। প্রিয় নেতার নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন মির্জা গোলাম আযাম।



৯. এইচ এন আশিকুর রহমান: রংপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচ এন আশিকুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে ১৬



ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তার সরকারের অধীনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে টাঙ্গাইলে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেন। এস এস এম শামছুল আরেফিন রচিত ‘



মুক্তিযুদ্বের প্রেক্ষাপট ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ের ৩৫০ পৃষ্টায় পূর্ব



পাকিস্তানে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়েছে। ৯ জানুয়ারি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজাকার আশিকুর রহমান আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বলে তার বিচার করবেন না তা হয় না। আমরা সব রাজাকারের বিচার চাই। মন্ত্রীসভায় রাজাকার রেখে রাজাকারের বিচার করা যায় না।



১০. মহিউদ্দিন খান আলমগীর: চাদপুর-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়মনসিংহে অতিরিক্তি জেলা প্রশারক পদে কর্মরত ছিলেন।



তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ সময় আরেফিন রচিত “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান বইয়ের ৩৫০ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে চিহ্নিত রাজাকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তার বিচার দাবি করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।



১১. মাওলানা নুরুল ইসলাম: জামালপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জামালপুর সরিষা বাড়ী এলাকার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকাররা ঐ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। “ দৃশ্যপট এক্ত্তার: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” গ্রন্থের ৪৫ পৃষ্ঠায় এর বিবরণ দেয়া আছে। এ ছাড়া গত ২৮ এগ্রিল দৈনিক আমাদের সময় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মাওলানা নুরুল ইসলামকে সরিষাবাড়ি এলাকার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।



১২. মজিবর রহামান হাওলাদার: কুটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান হাওলাদার সশস্ত্র রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায়



বসতবাড়ীতে অগ্নিকাণ্ড ঘটানোসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরে । এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকায়ও যুদ্বাপরাধী হিসেব তার নাম আছে।



১৩. আবদুল বারেক হাওলাদার: গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের পিতা আবদুল বারেক হাওলাদার ৭১ এ দালাল



ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪১ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট । দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকাতেও তার নাম আছে। বারেক হাওলাদার মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন।



১৪. আজিজুল হক: গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের ভাই আজিজুল হক কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গোপালগঞ্জের



কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪৯ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানেও তার নাম রয়েছে।



১৫. মালেক দাড়িয়া: আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়ার বাবা মালেক দাড়িয়া কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি ছিলেন আল বদরের একনিষ্ঠ সহযোগী। গণহত্যায় নেতৃত্ব দেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১৪০ নম্বরে। তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট।



১৬. মোহন মিয়া: গোপালগঞ্জ কোটারিপাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি আমির হোসেনের পিতা মোহন মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালাল ও রাজাকার



ছিলেন। স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম ছিল ১৫৭ নম্বরে।



১৭. মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া: উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়ার বাবা মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া রাজাকার ছিলেন। যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম আছে। তিনি পাকিস্তানীদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ



করতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের গোপন খবর পাকবাহিনীকে পৌঁছে দিতেন।



১৮. রেজাউল হাওলাদারঃ কোটালিপাড়া পৌর মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম অহেদুল ইসলামের ভগ্নিপতি রেজাউল হাওলাদের নাম ২০৩ জন রাজাকার, আল বদর, আলশামসসহ গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি আল বদর সদস্য হিসেব স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।



১৯. বাহাদুর হাজরাঃ কোটালিপাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলামের পিতা বাহাদুর হাজরার নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন সক্রিয় রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।



২০. আ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারঃ গোপালগঞ্জের এ পি পি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি পাকিস্তানীদের দোসর ও আল বদর বাহিনীর সহযোগী ছিলেন। আল বদর বাহিনীর সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করতেন তিনি।



২১. হাসেম সরদার: অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের পিতা হাসেম সরদারের নাম কোটালীপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন রাজাকার ছিলেন। ৭১ সালে তার নেতৃত্বে অনেক সাধারণ বাঙালির বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।



২২. আবদুল কাইয়ুম মুন্সি: জামালপুর বকশিগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি অবুল কালাম আজাদের পিতা আবদুল কাইয়ুম মুন্সীর বিরুদ্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে সহয়তা ও মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল জামালপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মালিচর নয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক আলী এ মামলা দায়ের করেন। আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত বলে জানা গেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বকশিগঞ্জে আল বদর বাহিনী গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পাক বাহিনীর



সাথে থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেন।



২৩. নুরুল ইসলাম-নুরু মিয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম নূরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গত ২১ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন। এ সময় তারা মন্ত্রী ও তার ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, তার বাবা নূরু মিয়া মু্ক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকর ছিলেন। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরের রাজাকারের তালিকায় ১৪ নম্বরে নুরু মিয়ার নাম থাকলেও তিনি যুদ্বাপরাধী ছিলেন না। পরের দিন ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় এ খবরটি প্রকাশিত হয়। নুরু মিয়ার অপকর্মের বিষয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির



অবস্থান’ বইয়ে বিস্তারিত বলা আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন প্রতিনিধি হয়েও আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন। তারা কেউ ছিলেন (এম এন এ) জাতীয় পরিষদ সদস্য, আবার কেউ ছিলেন (এম



পি এ) প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। মুক্তিযুদ্ধে তারা হানাদার বাহিনীকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। দেশের মুক্তিযোদ্বাদের হত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটতরাজ এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ নানা ধনের মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথেও তারা যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুজিবনগরের সরকারের মন্ত্রী পরিষদ, যুদ্ধাপরাধের সংক্রান্ত কিছু বই থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ সব নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এবার দেখা যাক মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গাহীন-চেতনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত আমাদের বাআল সরকার কি ব্যবস্থা নেয়! নিশ্চয়ই নিজের ঘর আওয়ামী লীগকে রাজাকার মুক্ত করতে বাআলের মধ্যে থাকা রাজাকারগুলোর বিচার করবে তারা। তো আর দেরি কেন-প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই মোশাররফকে দিয়েই শুরু হোক...

শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশ সীমান্তে ড্রোনে নজরদারি করবে ভারত

বাংলাদেশ সীমান্তে ড্রোনে নজরদারি করবে ভারত


কলকাতা সংবাদদাতা

বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারির জন্য ড্রোন ব্যবহার করবে ভারত। এর মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ, পাচারকারী ও জঙ্গি কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা হবে। এই বিষয়ে সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থা, দেশটির অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত প্রতিরক্ষার সঙ্গে যুক্ত দপ্তরগুলোর মধ্যে এক বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মেহর্ষি বলেন, ‘সামরিক ও বেসামরিক প্রয়োজনে ড্রোন ব্যাবহারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের কাজ করছে সরকার। ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আগামীতে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি করাই একমাত্র পথ। সেই পথে এগোনোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ভারত।’  ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় চার হাজার ৯৬ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে আনুমানিক এক হাজার ১৩৮ কিলোমিটার সীমান্তকে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও জঙ্গিরা প্রবেশ করতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। এ কারণে গত এক বছরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্ত বরাবর লেজার রশ্মির বেড়া স্থাপন, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় গভীর খাল খননের মতো পরিকল্পনাও নেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বারবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ির কথা বলা হলেও বাস্তবে কোথাও না কোথাও ফাঁক-ফোকর থেকে গেছে বলে মনে করে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এতে সীমান্ত পেরিয়ে জাল নোটের কারবার, মানব পাচার ও বিক্ষিপ্তভাবে অনুপ্রবেশ চলেছে বলে দাবি ভারতের। এ কারণে এবার বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোনকে ব্যবহারের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে ড্রোন ব্যবহার করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। একইভাবে এবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তাকে জোরদার করার লক্ষ্যে ড্রোন ব্যবহার করবে ভারত।  

শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫

সানিকে নিয়ে তথ্যচিত্র, যা বদলে দেবে আপনার চিন্তা

সানিকে নিয়ে তথ্যচিত্র, যা বদলে দেবে আপনার চিন্তা
সানি লিওন। একসময় কম্পিউটারের হিডেন ফোল্ডারে যিনি শত, হাজার, লক্ষ চোখের মধ্যে একাকী ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতেন লুকিয়ে, কেউ দেখে ফেললে কী ভাববে? উন্মুক্ত তিনি ছিলেনই, এখন গোটাটাই খুললাম খুল্লা। বলিউড কানেকশনের পর থেকেই গুগুল সার্চ ইঞ্জিনে সবথেকে বেশি যাদের খোঁজ করেছে নেটিজেনরা (ওয়েব দুনিয়ার বাসিন্দা), তার একটা দীর্ঘ তালিকা করলে প্রথম দশে অবশ্যই থাকবেন সানি।

প্রথমে পর্ন স্টার তারপর বলিউডের হার্ট থ্রব। কীভাবে হলো এই অসাধ্য সাধন? তাই এবার দেখা যাবে বড় পর্দায়। তবে এবার বাণিজ্যিক সিনেমা নয়, সানিকে নিয়ে তথ্যচিত্র বানাতে চলেছেন পরিচালক দিলিপ মেহেতা।

এই তথ্যচিত্রে প্রথমেই উঠে আসবে সানির পূর্ব পরিচয়ের নানান অজানা তথ্য। সানি লিওন হওয়ার আগে এই বলিউড তারকার নাম ছিল করণজিৎ কওর বোরা। কানাডার শিখ পরিবারের করণজিৎ কীভাবে সানি হলেন এই সমস্ত বিষয়ও থাকবে তথ্যচিত্রে।

রাজধানীর ভাটারায় হামলা বোমাবাজির পর গ্রেপ্তার ২ ছাত্রলীগ নেতা

গতকাল রাতে রাজধানীর ভাটারার জগন্নাথপুর এলাকায় গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা। ছবি : কালের কণ্ঠ
অ- অ অ+

রাজধানীর ভাটারায় দলবল নিয়ে হামলা ও বোমাবাজির পর ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। তাঁদের কাছ থেকে চাপাতিসহ দেশি কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভাটারার জগন্নাথপুর আজিজ সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর এলাকার ব্যবসায়ী ও লোকজন বিক্ষোভ করেছে। তাদের অভিযোগ, একটি হোটেলের মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ছাত্রলীগের এই দুই নেতা লোকজন নিয়ে ওই হোটেল ও এলাকার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মাহমুদুল হাসান অঞ্জন ও সাবেক সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া।

ভাটারা থানার ওসি নূরুল মুত্তাকিন দুজনকে গ্রেপ্তার ও দেশি অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিসমিল্লাহ নামের খাবার হোটেলটির মালিক বিলায়েত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, গত রবিবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান অঞ্জন ও জিয়াউল হক জিয়ার নেতৃত্বে কমপক্ষে ৩০ জন তাঁর হোটেলে এসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে না চাইলে পরের দিন আসবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। এরপর গত সোমবার তাদের পক্ষে উঠতি বয়সী সাত-আটজন কিশোর এসে তাঁর কাছে আবার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় কিশোররা তাঁকে মারধর করে। তখন তাঁর চিত্কারে স্থানীয় লোকজন এসে ওই কিশোরদের আটক করে। পরে তাদের স্থানীয় বাড়ি মালিক সমিতি 'জগন্নাথপুর সোসাইটির' কার্যালয়ে নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে বিচার বসে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

মালিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা অঞ্জন ও জিয়ার নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন মিছিল করে 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে বিসমিল্লাহ হোটেলসহ এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। তারা বাড়ি মালিক সমিতির কার্যালয়েও হামলা চালায়। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে মসজিদের মাইক থেকে হামলার বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানানো হয়। এরপর  স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের আটক করার চেষ্টা করে। তখন হামলাকারীরা ককটেল ফাটিয়ে পিছু হটে। কিন্তু ধরা পড়ে যান অঞ্জন ও জিয়া। পরে পুলিশ ডেকে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়।

গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গ্রেপ্তারকৃত জিয়া ও অঞ্জন বিএনপির সময় ছাত্রদল করত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা হয়েছে।

অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি থেকে নির্বাচিত সিনেটর ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী র‍্যান্ড পল তাঁর বিবেচনায় ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ ৩২টি দেশ থেকে উদ্বাস্তু গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে একটি প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করেছেন। এই খসড়া আইনে যে ৩২টি দেশকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সব মুসলিমপ্রধান দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

‘উদ্বাস্তু আগমন আইনের আওতায় জঙ্গিদের আগমন বন্ধ করো’-এ শিরোনামের খসড়া আইনটিতে উদ্বাস্তু বাছাইয়ের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে ছয়টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। যেমন- আবেদনকারীর ব্যক্তিগত ইতিহাস, তাঁর কার্যাবলির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। এই ছয়টি শর্ত পুরোপুরি পালিত হয়েছে মর্মে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর থেকে নিশ্চয়তা প্রদানের পরই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিনেটর পল দাবি করেছেন, সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা এড়াতে সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্দেশ্যেই তিনি এই প্রস্তাব করেছেন।

শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫

রণবীরের সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি : দীপিকা

রণবীরের সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি : দীপিকা

কথাটি বলেছেন কাপুর নয়, সিং-কে নিয়ে। দুই রণবীরের প্রেয়সী। একজনের 'এক্স'। তাতে কী! যখন খোলা মনের খোলা জবাবের প্রসঙ্গ আসে, দীপিকা একেবারে অন্য মানুষ। যাকে বলে স্ট্রেট ফ্রম দ্য হার্ট। সম্প্রতি আসন্ন ছবি 'বাজিরাও মস্তানি' ছবির প্রোমোশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের এমনই খোলা মনে উত্তর দিলেন সুন্দরী।
দীপিকা বলেন, 'রণবীর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। এর সঙ্গে আমার বিশেষ কথা বলার প্রয়োজন হয় না। আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং লেভেল এতটাই ভালো, আমরা শুধু একে অপরের দিকে তাকাই আর বুঝে যাই আমরা কী চাই। সিনেমার ক্ষেত্রেও এটা খুব ভালো কাজ করে। ওর সামনে আমি নির্দ্বিধায় নগ্ন হতে পারি। আমার এতটাই বিশ্বাস আছে ওঁর ওপর। আমি জানি ও আমায় কোনও দিন আঘাত করবে না। এ জন্য আমি ওকে ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি।'
দিন কয়েক আগেও এমনভাবেই রণবীর কাপুরের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'আমি অনুমতি না দিলে ও বিয়েই করতে পারবে না।' বছর খানেক আগে একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো-তে এসে সদ্য ব্রেক আপ হওয়া রণবীর সম্পর্কে দীপিকার মন্তব্য ছিল চমকে দেওয়ার মতো। তিনি বলেন, 'ও (রণবীর কাপুর) তো কন্ডোমের বিজ্ঞাপন করতে পারে। ওগুলো ব্যবহার করতে খুব ভালোবাসে কিনা!'
তবে দুই রণবীরের মধ্যে তুলনা টানতে নারাজ তিনি। দীপিকার মতে দু' জনে দু' রকম। ফলে তুলনা টানা ভুল হবে। তবে কেমিস্ট্রি যে দু'জনের সঙ্গেই জমপেশ হয় সে নিয়ে তর্কের কোনও জায়গা নেই। 'রামলীলা' বা 'ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি'তে দুই রণবীরের বাহুলগ্না হয়ে দর্শকদের মনেই নয়, ব্লকবাস্টারেও জায়গা করে নিয়েছেন এ মুহুর্তে বলিউডের এক নম্বর অভিনেত্রী।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)
বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে কালজয়ী চিরন্তন আদর্শ হিসেবে একমাত্র ইসলামই সব যুগে মানবসমাজে মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। দুনিয়াবাসীর কাছে সর্বপ্রথম মানবাধিকারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক অবস্থায় নবদীক্ষিত মুসলমানদের জীবনে যে অমানবিক অত্যাচার ও নিপীড়ন নেমে এসেছিল, তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছিল। আরবের কাফির-মুশরিকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানবতার মূর্ত প্রতীক নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করেন। এত অত্যাচার সত্ত্বেও ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সা.) সবাইকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জগদ্বাসীর সামনে উপস্থাপন করে রেখেছেন।

সভ্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণার সূত্রপাত

পাশ্চাত্য সভ্যতায় প্রথম মানবাধিকারের ধারণার জন্ম হয় খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে প্রথম ঘোষিত হয় Declaration of the People’s Right এবং ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন সংবিধানে সংযোজিত হয় The Bill of Rights.এর পর থেকেই পাশ্চাত্য দুনিয়ায় মানবাধিকারের ধারণাটি বিকশিত হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ববাসী এ বিষয়ে আরো সচেতন হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ৩০ ধারাসংবলিত সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বটে; কিন্তু কোনো রাষ্ট্রের ওপর এই সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

ফিতরাত তথা স্বভাবধর্ম ইসলাম মানবজীবনের জন্য উপযোগী আদর্শ পেশ করেছে। ইসলামে মানবাধিকার জীবনের সব দিক ও বিভাগে সমভাবে ব্যাপৃত। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবামূলক মৌলিক চাহিদাকেও ইসলাম মানবাধিকারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। জীবনরক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক তথা সব ক্ষেত্রে উপরোক্ত মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বজনীন মানবাধিকারের মাইলফলক মহানবী (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণে তা স্পষ্ট। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘হে মানবজাতি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক। তোমাদের পিতা হজরত আদম (আ.) এক। সাবধান! ‘অনারবের’ ওপর ‘আরবের’ কিংবা ‘আরবের’ ওপর ‘অনারবের’, শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর কৃষ্ণাঙ্গদের কিংবা কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর শ্বেতাঙ্গ মানুষের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।”

ইসলামে মানুষের নিরাপত্তা

ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। মহান স্রষ্টা প্রাণ দানের মাধ্যমে মানবজীবনকে যেমন সম্মানিত করেছেন, তেমনি জীবন হরণকে করেছেন নিষিদ্ধ। শরিয়তে কেবল বিচারকের রায়ের মাধ্যমে কারো জীবন সংহার স্বীকৃত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা কোরো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৩)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ‘নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সুরা মায়েদা : ৩২)

সম্পদ ও সম্ভ্রম রক্ষার অধিকার

ইসলাম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেয় এবং বৈধ উপায়ে উপার্জিত সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে। বৈধ উপার্জনের অধিকার, তার মালিকানা রক্ষা, হস্তান্তর, দান এবং তা ভোগ করার অধিকার ইসলাম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা বাকারা : ১২৮)

অন্যদিকে প্রত্যেক নাগরিকের ইজ্জত-আবরু রক্ষার গ্যারান্টি দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মানুষের মর্যাদাহানি, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নিন্দা, কুৎসা রটানো, বিদ্রূপ ও উপহাস করা, নাম ও উপাধি বিকৃত করাকে নিষিদ্ধ করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রূপ না করে।’ (সুরা হুজুরাত : ১১) এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের কাছে পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস।’ (সহিহ বুখারি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ. ৬৩২)

ইসলাম ও ব্যক্তিস্বাধীনতা

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় নিশ্চয়তা। যেকোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ইসলামী নীতি অনুযায়ী কোনো উপযুক্ত আদালতে আইনানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, আটক বা বল প্রয়োগ করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সমান সুযোগ থাকবে। বিচার কার্যক্রমে এ ন্যায়নীতি অনুসরণের ব্যাপারে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ—‘তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তা করবে।’ (সুরা নিসা : ৫৮) এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ থাকবে।’ (ড. ম. ই পাটোয়ারী ও মো. আখতারুজ্জামান, মানবাধিকার ও আইনগত সহায়তাদানের মূলনীতি, পৃ. ৫)

নারীর অধিকার

নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামই সর্বপ্রথম বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, সম্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। স্ত্রীর প্রতি আচরণ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।’ (সুরা বাকারা : ২২৮)

ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত ঘোষণা করে নারীর মর্যাদা সমুন্নত করেছে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অধিকারেরও স্বীকৃতি দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘তোমরা তা কামনা কোরো না, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো ওপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, পুরুষদের জন্য রয়েছে ওই অংশ, যা তাদের অর্জন, আর নারীদের জন্যও ওই অংশ, যা তাদের অর্জন।’ (সুরা নিসা  : ৩২)

সংখ্যালঘুদের অধিকার

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের ন্যায়সংগত অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি, ইজ্জত-সম্মান, চাকরি ইত্যাদির নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। মদিনা সনদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মদিনায় বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও বাকি অংশের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হয়নি। অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাস্যদের নিন্দাবাদ ও গালমন্দকে কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এভাবে—‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে, তাদের উপাস্যদের তোমরা গালাগাল কোরো না।’ (সুরা আনআম : ১০৮) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের মতোই এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’ রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘সাবধান! যদি কেউ কোনো মুআহিদের (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক) প্রতি জুলুম করে বা তাকে তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা সাধ্যাতিরিক্ত কোনো কাজ তার ওপর চাপিয়ে দেয় অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে কোনো মালামাল নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে থাকব।’ (আবু দাউদ, মিশকাত পৃ. ৩৫৪) মূলত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান  Charter of Madina-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি; বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫

অবশেষে জানা গেলো বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধের কারন

অবশেষে জানা গেলো বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধের কারন। জনগনের নিরাপত্তা বা জঙ্গী দমন নয়, বরং এর আড়ালে ছিল বাংলাদেশের ইন্টারনেট লাইনের ওপর চাপ কমিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরাকে ১০ গিগাবাইট পার সেকেন্ড ব্যান্ডউডথ হস্তান্তর। এ কাজটি করা হয়েছে হত ১ ডিসেম্বর, যা গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিক বিতরনে গেছে।

১০ জিবিপিএস খুবই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইন। ফেসবুক চালু অবস্থায় বাংলাদেশের কোটি কোটি গ্রাহকের স্বাভাবিক লাইন চালু রেখে এই পরিমান ব্যান্ডউডথ হস্তান্তর করতে গেলে গতি কমে গিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারত, যুব সমাজ ক্ষেপে উঠত, যা শেষ পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষেই যেতো। এসকল আশঙ্কায় বুদ্ধি করে জঙ্গী দমনের নামে বাংলাদেশের প্রযুক্তি মন্ত্রীরা আগে থেকেই বন্ধ করে দেয় সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক! যার ফলে কোটি কোটি বাংলাদেশী অনলাইন থেকে বিযুক্ত হয়ে পড়ে। মুলত, ভারতকে নানাবিধ আইটি সুবিধা তথা বিনাশুল্কে মোবাইল ফোন ব্যবসা, এদেশের কল ও ডাটা ভারতে মনিটর নিরাপদে সম্পন্ন করার জন্য গত ৬ বছর ধরে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরী কমিশনে একজন হিন্দু চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসকে বসানো হয়। তার অবসরের পরে ভারতীয় লবি ও শেখ হাসিনার পুত্রের সুপারিশে সেখানে বসানো হয়েছে ওয়াশিংটন মেট্র্ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শাহজাহান মাহমুদকে। এর আগেই পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের আইটি খাতের উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়েছে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) উদ্যোক্তা বিক্রম দাশ গুপ্তকে। তিনি বাংলাদেশের আইটি ও আইটি সক্ষম সেবা প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে (বিসিসি) কৌশলগত নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করছেন।

একদিকে বাংলাদেশে যখন ফেসবুক ভাইবারের জন্য চলছে হাহাকার, ঠিক তখন অপর পাড়ে ত্রিপুরায় কল্পনার হাইস্পীড লাইন পেয়ে চলছে মহাউৎসব। যেনো তারা জয় করেছে বাংলাদেশ। এভাবেই বার বার হারছে বাংলাদেশ, আর লুটে নিচ্ছে হিন্দুস্তান।

........হয়ত হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত এক এক করে এভাবেই ভারত নিয়ে যাবে তাদের দরকারী সব, যা পারে। শেষে কখনও যদি বাংলার প্রকৃত মুক্তি আসে, স্বাধীনতা পায়, তবে এইসব পরাধীনতার শোধ তুলে নেয়।

বড় ভাই বিজিবি মহাপরিচালক ছোট ভাই ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী


বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমদের ছোট ভাই ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তোফায়েল আহমেদ যোসেফের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে গতকাল বুধবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে নামিয়ে এনেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যার অর্থ শিগগিরই মুক্তি পাচ্ছেন সন্ত্রাসী যোসেফ।
প্রায় ২০ বছর ধরে বন্দী থাকায় এরই মধ্যে কারাদণ্ড ভোগও সম্পন্ন হওয়ায় যোসেফের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে বুধবার জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
কারাগারে পরিবর্তে যোসেফ দীর্ঘ দিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে আছেন। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে এখান থেকেই তিনি মুক্তি পাবেন বলে জানা গেছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে এই মুক্তি প্রক্রিয়াকে বিডিআর ধ্বংসের পর ভারতপন্থী অফিসারদের প্রাধান্য দিয়ে গঠিত বিজিবিকে শেখ হাসিনার মর্জি মত পরিচালনা করার জন্য একটি 'ছোট্ট পুরস্কার' বলে মন্তব্য করেছেন।
যোসেফ, আনিস এবং হারিস- এই তিন কুখ্যাত সন্ত্রাসীর বড় ভাই মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এই বিজিবিকে দিয়ে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন।
অন্যদিকে সারাদেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা, ক্রস ফায়ারে দেয়া ও গুম করার ক্ষেত্রে মুল ভূমিকায় এই মেজর জেনারেল আজিজই মুল বলে অনেকেই মনে করেন। সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করেছেন, বিজিবি এখন সীমান্ত পাহারার পরিবর্তে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের দলনেই ব্যস্ত ।
যোসেফের রায়ের পর ফেসবুকে একজন লিখেছেন, "এটা তো আজিজের জন্য হাসিনার ছোট্ট একটি পুরস্কার! তার জন্য ভবিষ্যতে আরো বহু বড় বড় পুরস্কার অপেক্ষা করছে। তার কাজটা হচ্ছে শুধু ভারতের ইশারা অনুযায়ী এবং শেখ হাসিনার ইচ্ছা মত কাজ করে যাওয়া।"
মোহাম্মদ সাকের নামে একজন ফেসবুকার লিখেছেন, "কি আর বলবো আওয়ামী লীগ ১০০ টা খুন করলে ও কোন সমস্যা নাই। এই হলো গনতন্ত্র। যা করুক দেখবেন কোন এক দিন আওয়ামী লীগের কবর হইয়া যাবে বেশি বারাবাড়ি ভাল না।"
অন্য একজন লিখেছেন, "আওয়ামী অনুগত প্রধান বিচারপতি যতদিন থাকবেন ততদিন পযন্ত কোন আওয়ামী সন্ত্রাসীর ফাঁসি হবেনা। এই গ্যারান্টি নিয়ে তাকে এই পদে রাখা হয়েছে। তবে বিএনপি-জামাত হলে জোর করে ফাঁসি দেয়া ওপরের আদেশ।"
আরেকজন ফেসবুকে লিখেছেন,
মুজিব কোর্টে আছেন সুরেন্দ্র ভাই
জোসেফ তোমার ভয় নাই,
আজিজ ভাই বন্দুক ছাড়ে নাই
আরেকজন লিখেছেন, "সবাই ইসলাম ধর্ম বাদ দিয়ে আওয়ামি নামক নতুন ধর্মে যোগ দিন, এমন সুবিচার পেয়ে যাবেন।"

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দিনাজপুরে একটি ইসকন মন্দিরে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দিনাজপুরে একটি ইসকন মন্দিরে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার ঘটনায় দু’জন আহত হয়েছেন।

তবে হামলাকারী সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, কাহারোল উপজেলায় হিন্দু ধর্মের অবতার কৃষ্ণের ভক্তদের একটি মন্দিরে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার কিছু পরে হামলার ঘটনাটি ঘটে। সে সময় মন্দিরটিতে ধর্মসভা চলছিল।

অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা সেখানে প্রথমে গুলি বর্ষণ করে এবং এরপর হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং পরে হামলাকারী সন্দেহে একজনকে হাতবোমা সহ আটক করা হয়েছে।

দিনাজপুরে একটি উপজেলা ইসকন সভাপতির ওপর সম্প্রতি গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল।

আর মাত্র কয়েকদিন আগে কাহারোলেই কান্তজিউ’র মন্দির প্রাঙ্গণে যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা বিস্ফোরণে পাঁচজন আহত হন।

দিনাজপুর শহরে সম্প্রতি একজন ইতালীয় যাজকের ওপর হামলা হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

যে প্রেমের শুরুই হয় বিছানায়, তা কি টিকে!

সাধারণত প্রথমে প্রেম, তার পর বিছানার তত্ত্বেই বেশিরভাগ গল্প চলে এসেছে এতকাল। কেমন হয়, যদি গল্প শুরু হয় বিছানায়? কেমন হবে তা তো আপাতত অজানা। কিন্তু সেটাই জানাতে আগামী বছর জানুয়ারিতে মুক্তি পাচ্ছে 'লাভশুদা'। সম্প্রতি ছবির অফিশিয়াল টিজার মুক্তি পেয়েছে।
সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন গিরিশ কুমার এবং নবনীত ধিলোন। যদি নামগুলি একটু অচেনা লাগে তাহলে একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে। ২০১৩-য় প্রভু দেবা পরিচালিত একটি সিনেমা মুক্তি পায় 'রামাইয়া বস্তাবইয়া'। সেখানেই ডেবিউ করেন গিরিশ। বাবা কুমার তওরানি এই ছবির প্রযোজকও ছিলেন। নায়িকার চরিত্রে ছিলেন শ্রুতি হাসান। তবে সিনেমাটি একেবারেই চলেনি। ছবির জন্য দু'-একটি নমিনেশন পেয়েছিলেন গিরিশ। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
প্রায় দেড় বছর পর ফের বড় পর্দায় ফিরছেন গিরিশ। টিপস-এর ব্যানারেই পরবর্তী ছবিতে গিরিশকে সম্পূর্ণ অন্য লুকে দেখা যাচ্ছে। ক্লিন শেভড, স্ট্রেট ছোট করে ছাঁটা চুল। আগের ছবির সঙ্গে কোনও মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে তাঁর বিপরীতে বলিউডে পা রাখছেন নভনীত। ২০১৩-য় মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তিনি। সুস্মিতা, ঐশ্বরিয়া, প্রিয়াঙ্কাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে বলিউডে পা রাখছেন নভনীত। যদিও টিজারটি অ্যাডাল্ট সার্টিফিকেট দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ টিজারে BED কথাটি রয়েছে। ছবি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন বৈভব মিশ্র।

মাদারীপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

আজ বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) মাদারীপুর জেলা শাখার আয়োজনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে এদিন বিকেল ৩টায় স্বাধীণতা অঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপরে এম এম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরীতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তৃতা করেন সরকারী নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিতেন চন্দ্র মন্ডল, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার হাসান আলী, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ।

দশ বছরে দেশ থেকে ৫৫ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার পাচার


২০০৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৫৫ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একইসাথে এই ১০ বছরে বিশ্বের উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো থেকে ৭ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে।এর মধ্যে অবৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে পাচার হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অবৈধভাবে মুদ্রা পাচারের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৬ নম্বরে। শীর্ষ পাঁচে রয়েছে চীন, রাশিয়া, মেক্সিকো, ভারত ও মালয়েশিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) বুধবার বিশ্বের উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মুদ্রা পাচার নিয়ে একটি সমীক্ষাপত্র প্রকাশ করেছে। যাতে গোটা বিশ্বের অবৈধভাবে মুদ্রা পাচারের তালিকা প্রকাশ পায়। জিএফআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ দেব কার ও কনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্পানজার সমীক্ষাপত্রটি তৈরি করেন। বাংলাদেশ থেকে  অবৈধভাবে মুদ্রা পাচারে জিডিপির হিসাবে পরিমাণ ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০০৩-১২ সালের প্রকাশিত সমীক্ষাপত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫১তম।

'উন্নয়নশীল দেশ হতে মুদ্রা পাচার : ২০০৪-২০১৩’ শিরোনামে ওই সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে বিশ্বে অবৈধ মুদ্রা পাচারের পরিমাণ প্রথম ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০১৩ সালে পাচার হয় ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার। যেখানে ২০০৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৬৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

সমীক্ষাপত্রটি সম্পর্কে জিএফআইয়ের চেয়ারম্যান রেমন্ড বেকার বলেন, এই সমীক্ষা থেকে এটা স্পষ্ট যে, উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশগুলোর জন্য অবৈধ মুদ্রাপ্রবাহ তাদের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় বাধা।

২০০৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া মুদ্রার পরিমান ছিল ৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৩ সালে তা বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গড়ে প্রতিবছর ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশী মুদ্রা পাচার হয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলায় বাসায় আটকে রেখে কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় গৃহকর্মীর বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।


গৃহকর্মীর পরিবার জানায়, ওই কিশোরীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল তাঁর ঢাকার বাসায় ওই কিশোরীকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসেন। যুবলীগ নেতার স্ত্রী চাকরি করেন বলে বেশ কিছুটা সময় বাইরে থাকতেন। এ সুযোগে শাহজালাল তাকে বাসায় জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে গত শনিবার শাহজালাল তাকে বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে চাঁদপুরে নিয়ে গিয়ে এক স্থানে ফেলে পালিয়ে যান। পরে ওই কিশোরী লক্ষ্মীপুরে বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের এ ঘটনা জানায়।

ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, এ ব্যাপারে রায়পুর থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। থানা থেকে বলা হয়, ঘটনাস্থল ঢাকা হওয়ায় সেখানকার সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে হবে। এরপর গৃহকর্মীকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের অনুমতি নেই বলে গৃহকর্মীকে ভর্তি করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণ ও পরবর্তী ঘটনা জানিয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সুপার শাহ মিজান সাফিউর রহমান আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। রায়পুর থানার পক্ষ থেকে বিষয়টি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় জানানো হয়। রায়পুর থানার তত্ত্বাবধানে গৃহকর্মীর পরিবারকে শেরেবাংলা নগর থানায় পাঠানো হয়। আজ সকালে গৃহকর্মীর বাবা এ থানায় শাহজালালকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আজ সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে যোগাযোগ করা হলে যুবলীগ নেতা শাহজালালের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গত সোমবার তিনি ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছিলেন, রাজনীতি করার কারণে একটি চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরী আজ ঢাকা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়েছে। বর্তমানে ওই কিশোরীকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বয়স নির্ধারণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হবে।

সরকারদলীয়দের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য পায় না দুদক


পাঁচ বছরে দুদকের কৌশলী পদক্ষেপে সরকারি দলের দুই শতাধিক রাজনীতিবিদ ও সরকার-সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তি দুর্নীতির মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে বিরোধী দলের রাজনীতিবিদেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মামলা থেকে রেহাই পাননি।
ওই সময়ে আরও কয়েক হাজার প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়লেও অনুসন্ধান পর্যায়ে নথিভুক্ত (মামলার জন্য উপযুক্ত নয়) এবং মামলা করার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়েছে। কমিশনের ভাষায় ‘অভিযোগের আমলযোগ্য তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার কারণে’ তাঁরা অব্যাহতি পেয়েছেন।
তবে দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে দুদক কাউকেই ছাড় দেয় না। কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করে না। অনুসন্ধানের সময় আদালতে উপস্থাপন করার মতো তথ্য না পেলে অভিযোগটি নথিভুক্ত করে কমিশন। আর তদন্তে কোনো অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়া গেলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের জন্য ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার কয়েকবারে ৩৩৭ জনের তালিকা পাঠায় দুদকে। তাঁদের সবাই সরকারদলীয় নেতা কিংবা সরকার-সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তি। কিন্তু দুদক আইনে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনা করে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ না থাকায় ভিন্ন কৌশলে তাঁদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগের ‘সত্যতা’ না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া, ‘মানবিক বিবেচনা’য় আপিল না করা এবং আপিলের পর উচ্চ আদালতে উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজের আবেদন করা—এ তিন পদ্ধতিতে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
কিন্তু গত ১২ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ হাজি সেলিমের দুর্নীতির মামলা শেষ মুহূর্তে না চালানোর জন্য দুদকের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি ওই আদেশে বলেন, শুনানিকালে এভাবে খারিজের আবেদন করা বা মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে আদালত বিভ্রান্ত হন। হাজি সেলিমের এই মামলায় ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন। রায়ে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের দণ্ড বাতিল হয়।
দুদকের প্যানেল আইনজীবী খুরশিদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, যে আইনি ব্যাখ্যার ভিত্তিতে আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা খুবই স্পষ্ট। তাই একই ধরনের কোনো মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে আপিল বিভাগ নিরুৎসাহিত করেছেন।
সরকারি দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এভাবে একের পর এক ছাড় পেয়ে গেলেও বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বা তদন্তে খুবই কঠোর অবস্থানে দুদক। এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদকে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ’৯৬ সালের একটি নোটিশের ধারাবাহিকতায় সম্পদ বিবরণী দিতে হয়েছে দুদকে। গত বছর হিসাব বিবরণী দিতে দুদকে এসে অলি আহমদ সাংবাদিকদের কাছে বলেন, মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করার খেসারত হিসেবে তাঁকে দুদকে আসতে হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও তাঁর প্রবাসী ভাই মঞ্জুর আহমদ, বিএনপির নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার, এম মোরশেদ খান, আলী আসগার লবি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা, মোসাদ্দেক আলী ফালু, এহছানুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দুদকের মামলায় লড়ছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের একাধিক মামলা চলছে। তবে খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির একটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় দুদক। আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা পরিচালনার সময় সিঙ্গাপুর থেকে পাচার করা অর্থ ফেরত এনেছে দুদক।
দুদকে আসা অভিযোগ ও অনুসন্ধানের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন লাখের বেশি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার অভিযোগের অনুসন্ধান হয়। বাকি অভিযোগগুলো দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অনুসন্ধানের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। ২২ হাজার অভিযোগ অনুসন্ধানের পর প্রায় চার হাজার মামলা করা হয়। অভিযোগের ‘সত্যতা’ না পাওয়ায় নথিভুক্ত করা হয় প্রায় ১৮ হাজার অভিযোগ। এর মাধ্যমে ১৮ হাজার ৩৯ জন দুদকের অব্যাহতিপত্র পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ী ৬৯৭ জন, বিভিন্নভাবে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি ১৫ হাজার ১১ জন এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন অন্তত তিন হাজার।
অন্যদিকে এ সময়ে করা মামলাগুলোর মধ্যে ১ হাজার ১৩১টির অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ২ হাজার ৮৬৭টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ৩ হাজার ২২ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারদলীয় নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ী রয়েছেন ৮৬১ জন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাপক হারে দায়মুক্তির কারণে এ প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক যে দুদক বাস্তবেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের ঊর্ধ্বে উঠে পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে কি না।
অভিযোগ থেকে দায়মুক্তির ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখা গেছে, অনেক ঘটনায় দৃশ্যমান প্রমাণ থাকলেও দুদকের কর্মকর্তারা এর কোনো প্রমাণ পাননি। নির্বাচন কমিশনে নিজেদের দেওয়া হলফনামায় আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ থাকলেও ‘ভুল হয়েছে’ অজুহাত গ্রহণ করে অনেককে দায়মুক্তি দিয়েছে দুদক। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বেশ জোরালো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আলোচিত অনেক ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তি পেয়েছেন বলে কথিত রয়েছে।
নবম জাতীয় সংসদের হলফনামা নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শেষে হলফনামায় তথ্য দিতে ‘ভুল হয়েছে’ যুক্তি গ্রহণ করে আ ফ ম রুহুল হক ও আসলামুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় সংস্থাটি। সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে ২১৩ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে অনুসন্ধান কর্মকর্তা মামলার সুপারিশ করলেও তাঁকে অব্যাহতি দেয় কমিশন। তবে সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সাংসদ আবদুর রহমান বদি, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও সাতক্ষীরার সাবেক সাংসদ আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বন্ধুদের সম্মাননা দেওয়ার সময় ক্রেস্টের সোনা জালিয়াতির অনুসন্ধানের কাজ শুরু হলেও দীর্ঘদিনেও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই।
রেলওয়ের দুর্নীতির কালো বিড়াল ধরার ঘোষণা দিলেও দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার অভিযোগ ওঠে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে। কিন্তু ঘুষের তথ্য ফাঁসকারী ইউসুফ আলী মৃধার গাড়িচালক মো. আলী আযম প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিতে না আসায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করে তাঁকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর রেলওয়ের নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে ১৩টি মামলা করে দুদক। ওই সব মামলার প্রধান আসামি ইউসুফ আলী মৃধাকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে ছয়টি মামলার অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বহুল আলোচিত হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠলেও মামলায় তাঁকে আসামি করেনি দুদক। দায়মুক্তি দেয় অনুসন্ধান পর্যায়েই। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকেও মামলায় আনা হয়নি। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য থাকলেও দুদকের করা ৫৬টি মামলার একটিতেও আবদুল হাই বাচ্চু বা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি।
পেট্রোবাংলায় নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুরের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেওয়া হলেও মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদে ৪০৩টি হজ এজেন্সিকে লাইসেন্স দেওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অনুসন্ধান চালায়নি দুদক। অথচ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস সৌমেন্দ্র লাল চন্দর বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এ ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে দায়মুক্তি পেয়েছেন ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাংসদ হাজি সেলিম, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান, আনন্দ শিপইয়ার্ডের মালিক আবদুল্লাহিল বারী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল হুদা, ইউসিবিএলের এমডি মুহাম্মদ আলী, সোনালী ব্যাংকের সিবিএর সাধারণ সম্পাদক হাসান খসরু, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুছুর রহমান, পুলিশের ডিআইজি (এসবি) মো. রফিকুল ইসলাম, এসপি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

BD News

বিডি নিউজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আলোকিত নাম, বাংলাদেশের জাতিয় মাধ্যম গুলি জখন সৈরাচার শাসক এর দখলে, তখনি সত্যর বানি নিয়ে হাজির বিডি নিউজ, এটি সুদখ্য  সম্পাদক দারা পরিচালিত, সারা বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা সব খবর সাথে সাথে প্রচার করা হয়, দেশের বাহিরেও রয়েছে অসংখ্য সাংবাদিক, তারা প্রতি মুহূর্তেই আপডেট দিয়ে থাকেন প্রবাসের খবর, বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ার শুধুমাত্র বিডি নিউজেই রয়েছে ২৪ ঘন্টা অনলাইন,
আপনার যেকোনো খবর আমাদের পেজে প্রচার করতে যোগাযোগ করুন Facebook page

রাজস্ব আদায় ১৪% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ৮ হাজার কোটি টাকা

রাজস্ব আদায় ১৪% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ৮ হাজার কোটি টাকা
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ রাজস্ব ১৪ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। অবশ্য এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ মাসে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় নি। আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৮ হাজার ৮ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা।
সূত্র জানিয়েছে, সর্বশেষ গত নভেম্বরে রাজস্ব আদায়ে বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা যা গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের নভেম্বরে আদায় হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছর ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে এনবিআরকে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে বছর শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সমপ্রতি এক প্রাক্কলনে জানিয়েছে, অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
অবশ্য এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান মনে করেন, বছর শেষে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। ইত্তেফাককে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে গতি বেড়েছে। গেল নভেম্বরের রাজস্ব আদায়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এর বড় প্রমাণ। তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা ও বিপিসি’র কাছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার বকেয়া রাজস্ব আদায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মামলায় আটকে থাকা ৩১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব উদ্ধারেও তত্পরতা শুরু হয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড  বাড়ার ফলে আমদানি রপ্তানিতে গতি ফেরা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে অগ্রগতির ফলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের শুরুতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হলেও কাঙ্খিত পরিমানে আদায় না হওয়ায় পরবর্তীতে তা কমিয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। বছর শেষে অবশ্য ওই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা হলেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশের কিছু বেশি। চলতি বছর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাষী আখ্যা দিয়ে অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, স্বাধীনতার পর কখনোই ২৯ শতাংশ হারে রাজস্ব আদায় বাড়েনি। একবারই ২২ শতাংশ হয়েছিল ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ত্তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, আমদানি-রপ্তানিতেও আহামরি গতি নেই। বিনিয়োগেও গতি মন্থর। ফলে সার্বিক বিবেচনায় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন হওয়ার কথা নয়।

বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

সিলেট-মৌলভীবাজারে ইউরেনিয়ামের সন্ধান

সিলেট-মৌলভীবাজারে ইউরেনিয়ামের সন্ধান
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা সিলেট ও মৌলভীবাজারের পাহাড়ি অঞ্চলে মূল্যবান পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম প্রচুর পরিমাণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পরমাণু বোমার প্রধান উপকরণ হলো এই ইউরেনিয়াম।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুই জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে এই তেজস্ক্রিয় খনিজের ঘনত্বও অনেক বেশি। এখন সরকার এগিয়ে এলেই এই খনিজ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বাপশক) সম্মেলন কক্ষে ‘ইউরেনিয়াম সার্চিং অ্যা- কোয়ান্টিফিকেশন : এন অ্যাটেম্পট অ্যা- সাকসেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. একেএম ফজলে কিবরিয়া।

পরমাণু শক্তি কমিশনের নিউক্লিয়ার সেফটি, সিকিউরিটি ও সেফগার্ডস বিভাগের প্রধান এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, সিলেট ও মৌলভীবাজারের বেশ কয়েকটি স্থান থেকে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তাসম্পন্ন পাথর সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এসব পাথরে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি রয়েছে। কিছু কিছু পাথরে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামও রয়েছে, যার ঘনত্ব ৫০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) এরও বেশি।

ড. ফজলে কিবরিয়া জানান, পাথর সংগ্রহ করে ‘গামা স্প্রেকট্রোস্কপি’ পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে এগুলোতে ইউরেনিয়াম এর সন্ধান পাওয়া পায়। পরে ‘এনার্জি ডিসপার্সিব এক্সরে’ পরীক্ষার মাধ্যমে নমুনায় ইউরেনিয়ামসহ অন্যান্য সম্ভাব্য মৌল শনাক্ত করা হয়। তিনি জানান, কিছু কিছু পাথরে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম রয়েছে। এটা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক খবর।

তিনি আরো জানান, জাপান ও কোরিয়ায় কয়েকটি নমুনা পাঠানো হয়েছিল। দুই দেশের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের সাথে বাংলাদেশের ফলাফল সঙ্গতিপূর্ণ। এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, এটাই বাংলাদেশে প্রথম চেষ্টা যার মাধ্যমে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলাগুলোর নমুনা সংগৃহিত ঠিক কোন স্থানে কতো ঘনত্বের ইউরেনিয়াম রয়েছে, সেসব স্থানের জিপিএস রেকর্ড সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।



ড. ফজলে কিবরিয়া জানান, দেশে ইউরেনিয়াম রয়েছে এমন খবর জানা থাকলেও লোকেশনের সঠিক ডাটাবেজের অভাবে সেসব ফলাফল বর্তমান সন্ধানে তেমন কাজেই আসেনি। এমনকি কোনো কোনো স্থানে ইউরেনিয়ামের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) প্রকাশিত ইউরেনিয়াম উত্তোলন সম্বন্ধীয় বইয়ে উল্লেখিত তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী যেসব খনি থেকে বর্তমানে ইউরেনিয়াম উত্তোলন করা হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশতেই এর ঘনত্ব ৩০০-১০০০ পিপিএম। এটা খুশির খবর যে, আমাদেরও উত্তোলনযোগ্য ঘনত্বের ইউরেনিয়াম রয়েছে। এখন প্রয়োজন কতোটুকু এলাকাজুড়ে এমন ঘনত্বের ইউরেনিয়াম রয়েছে এবং দেশের আর কোথায় কোথায় এমন ঘনত্বের ইউরেনিয়াম রয়েছে তা খুঁজে বের করা। এ জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ‘বাপশক’ এর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ড. দিলীপ কুমার সাহা, ভৌত বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক ড.
আলেয়া বেগম, মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী আনিছা বেগম, খাদ্য ও তেজস্ক্রিয় ইনিস্টিটিউটের পরিচালক ড. খোরশেদ আলম, বৈজ্ঞানিক তথ্য বিভাগের পরিচালক ড. হিমাংশু, প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী জাফর সাদেক, তেজস্ক্রিয় খনিজ ইউনিটের প্রাক্তন পরিচালক ড. ইউনুস আকন্দ প্রমুখ। সেমিনারে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ওপর গবেষণা করেন এমন ১০০ জন বিজ্ঞানীও অংশ নেন।


ব্যাপক সম্ভাবনার হাতছানি, উদ্যোগ নেই ৪০ বছরেও

বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন সূত্র জানায়, ১৯৭৫ সালে মৌলভীবাজার জেলার তৎকালীন কুলাউড়ার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফুলতলা ইউনিয়নের হারাগাছা পাহাড়ে সন্ধান পাওয়া যায় ইউরেনিয়ামের। পরবর্তীকালে তৎকালীন সিনিয়র ভূতত্ত্ববিদ ড. ইউনূস এর নেতৃত্বে কমিশনের একটি দল হারাগাছা পাহাড়ে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন। কমিশনের অনুসন্ধানে ইউরেনিয়াম প্রাপ্তির সম্ভাবনাও নিশ্চিত হয়। তারপরও খনিজ পদার্থ আহরণ বা উত্তোলনের ব্যাপারে তখনো কোনো পদক্ষেপ সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি।

১৯৮০ সালে পুনরায় দেশের একমাত্র ইউরেনিয়াম প্রকল্প এলাকা হারাগাছা পাহাড়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হয়। সেইসাথে অন্যান্য খনিজ সম্পদের ব্যাপারেও ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। পরবর্তীতে ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে প্রকল্পটির কার্যক্রমগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে। ১৯৯১ সালে আবারো অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়। সে সময়ে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের সিনিয়র ভূতত্ত্ববিদ ড. ইউনূস জাপানের আণবিক জ্বালানি বিষয়ক গবেষণাগারে হারাগাছা এলাকা থেকে সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষার পর এখানে ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব পুনরায় নিশ্চিত করেন। সেই সাথে এ পাহাড়ে তেল, গ্যাস ও কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, হারাগাছা ছাড়াও বৃহত্তর সিলেট ও চট্টগ্রামের আরো প্রায় তিন শতাধিক স্থানে প্রতি ১০ লাখ মাটিকণার মধ্যে ৫০০-১৩০০ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম কণা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এসব স্থানে ইউরেনিয়াম প্রাপ্তির হার ৫০০-১৩০০ পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম)।

আণবিক শক্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পারমাণবিক বোমা তৈরি এবং পারমাণবিক চুল্লিতে শক্তি উৎপাদক হিসেবে এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহৃত হয়। ২০০৯ সালের শেষ সময়ে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা কর্তৃক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে দেশে পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদনের মূল উপাদান ইউরেনিয়াম অনুসন্ধান ও উত্তোলন প্রয়োজন। ২০০৯ সালের ২৯ নভেম্বর সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এনামুল হক সিলেটসফরকালে জানান, জুড়ী উপজেলায় আবিষ্কৃত ইউরেনিয়াম আকরিক প্রকল্পটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে আণবিক শক্তি কমিশন। প্রাথমিক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর জুড়ীতে আবিষ্কৃত ইউরেনিয়াম আকরিক প্রকল্প থেকে ইউরেনিয়াম উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া হবে। কিন্তু অধ্যাবধি বাস্তবে এ প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।

ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর এবং পারমাণবিক শক্তি কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, ১৯৮৫ সালে তৎকালীন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া (বর্তমানে জুড়ী) উপজেলার ফুলতলা ও কুলাউড়া উপজেলার সাগরনাল এবং সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পাওয়া যায়। ইউরেনিয়াম অনুসন্ধানের জন্য গত ২৭ বছরে ওইসব এলাকায় ৩০টি অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয়েছে। ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফরের সহাতায় এ কাজ করে পারমাণবিক শক্তি কমিশন। পরবর্তীতে পারমাণবিক শক্তি কমিশন খনন কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে আর নতুন কোনো অনুসন্ধান চালানো হয়নি।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত খনিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর, ইউরেনিয়াম, কাঁচবালি, চীনামাটি, কঠিন শিলা, পিট কয়লা, ভারি মেটাল ও লাইম স্টোন। মূল্যবান এসব খনিজ সম্পদের প্রায় সবকয়টিরই অস্তিত্ব রয়েছে সিলেট বিভাগে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বড়লেখার হাকালুকি হাওরে পিট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হলে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হবে। খনিজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হলে মাথাপিছু এ দেশের জাতীয় আয় দাঁড়াবে ৮২৫ ডলার থেকে সাড়ে ৩ হাজার ডলারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার হারাগাছা পাহাড়ই নয়, কুলাউড়া উপজেলার সাগরনাল এবং সিলেট জেলার জৈন্তাপুরে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ইউরেনিয়াম আহরণ করলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হবে। এছাড়া বড়লেখা উপজেলার সীমান্তবর্তী বোবারথল, সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাশটিলায়ও ইউরেনিয়াম প্রাপ্তির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, জুড়ীতে ইউরেনিয়াম, মাধবকুণ্ডের পেছনে সীমান্তবর্তী বিওসি টিলা ও ফুলছড়া চা বাগানে তৈলসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর রয়েছে। এইসব খনিজ সম্পদকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে একটি রিপোর্ট খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের শেষদিকে একটি টিম মৌলভীবাজারে আসে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে অদ্যাবধি এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এবার নিদের্শনা আসলে কাজ শুরু করা হবে।More

বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫

লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত



লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে অমূল্য চন্দ্র বর্মণ নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তের ৯০১নং মেইন পিলারের ৬ নম্বর সাবপিলার সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। নিহত অমূল্য চন্দ্র বর্মণ (৩৮) হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের দইখাওয়া এলাকার মহেশ চন্দ্র বর্মণের ছেলে।

এলাকাবাসী ও বিজিবি জানান, হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তের ৯০১ নম্বর মেইন পিলারের ৬নং সাব পিলার সীমান্তে ৬/৭ জনের গরু ব্যবসায়ীর একটি দল সীমান্তের তারকাঁটা কাটার সময় ভারতের কোচবিহার ২১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বড়মরিচা ক্যাম্পের বিএসএফের একটি টহল দল তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে অমূল্য বর্মণ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। অন্য গরু ব্যবসায়ীরা নিহতের লাশ টেনে হেচড়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসে।

লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহমদ বজলুর রহমান হায়াতী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিএসএফের গুলিতে গরু ব্যবসায়ী অমূল্য মারা যাছেন। এ ঘটনায় বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে এবং পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫

চট্টগ্রামে হত্যা মামলার আসামী ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপতার



চট্টগ্রামে হত্যা মামলার আসামী ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপতার

চট্টগ্রাম নগরীর রেলের টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে সিআরবিতে জোড়া খুনের অন্যতম আসামি বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নগরীর গোয়ালপাড়া থেকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক এএসপি সাহেদা সুলতানা।

জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ জুন রেলের ৫৮ লাখ টাকার টেন্ডার জমাদানকে কেন্দ্র করে সিআরবি এলাকায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর বাবর ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা (পরে বহিষ্কার) নেতা সাইফুল আলম লিমন গ্রুপের গোলাগুলিতে যুবলীগকর্মী সাজু পালিত ও আট বছর বয়সী স্থানীয় শিশু আরমান হোসেন টুটুল নিহত হয়। ওই ঘটনায় কোতয়ালী থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনহ দু’পক্ষের ৮৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সোমবার এ মামলায় পুলিশ বাবর ও লিমনকে অভিযুক্ত করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৬২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৫

দুধ চায়ের চেয়ে রং চা ভালো

দুধ চায়ের চেয়ে রং চা ভালো?

সাধারণ পানির পরই চা হচ্ছে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত পানীয়। নানা রকমের চা পান করে থাকে বিশ্বের সব অঞ্চলের মানুষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কেবল সর্বাধিক জনপ্রিয়ই নয়, চা একটি অন্যতম স্বাস্থ্যকর পানীয়ও, কেননা এতে যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন আছে তা হূৎপিণ্ড ও রক্তনালি সুস্থ রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হচ্ছে যে চায়ে দুধ মেশালে এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণাগুণ অনেকটাই বিনষ্ট হয়। কালো চা এবং দুধ চা পান করেন এমন ব্যক্তিদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে যে কালো দুধবিহীন বা রং চা (র টি) রক্তনালির জন্য যতটা ইতিবাচক, দুধ চা ততটা নয়। কারণটা সুস্পষ্ট না হলেও ধারণা করা হচ্ছে যে দুধের আমিষ চায়ের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদানের সঙ্গে মিশে একে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। সূত্র: ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল।

GreenBangla.com

GreenBangla.com™ ২০১৫ সাল থেকে গ্রিনবাংলা.কম মিডিয়া কর্পোরেশন কর্তৃক বাংলা  ভাষায় প্রকাশিত বাংলাদেশের একটি অনলাইন সংবাদপত্র মাধ্যম, বাংলাদেশের সকল গনমাধ্যম জখন সরকারের দখলে, তখনি সত্যর বানি জনগনের কাছে পোউছে দিতে GreenBanglar এই উদ্যোগ,
এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও সাংবাদিক, মুহাম্মাদ শামীম
যেকোনো তথ্য অভিযোগ ও মতামত জানাতে যোগাযোগ করুন।
Mobail:+971567717396
Google
facebook