বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫

যুবলীগের ক্রসফায়ারে গর্ভাবস্থায় আহত শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে

যুবলীগের ক্রসফায়ারে গর্ভাবস্থায় আহত শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে

যুবলীগের ক্রসফায়ারে আহত গর্ভের শিশুকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন ডাক্তাররা। গতকাল শিশুটির চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুটির মা নাজমা এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার মাগুরার দোয়ারপাড় এলাকায় যুবলীগের কামরুল ভূঁইয়ার সাথে আলী হোসেন ও আজিবর বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় আলী হোসেন আজিবর বাহিনী কামরুল ভূঁইয়ার বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে কামরুল ভূঁইয়ার ভাই বাচ্চু ভূঁইয়ার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা নাজমা, মোমিন ও মিরাজ গুলিবিদ্ধ হন। ওই রাতেই মোমিন হাসপাতালে মারা যান। রাতেই নাজমা অস্ত্রোপচারে একটি মেয়ে জন্ম দেন। জন্মের পর দেখা যায় শিশুটির শরীরেও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার পিঠ দিয়ে গুলি লেগে বুকের এক পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। এ ছাড়া একটি চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ দিকে মাগুরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ২৫ জুলাই ভোরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন শিশুটির চাচা রেজাউল কবির ও ফুপু শিউলি বেগম। শিশুটিকে শিশু সার্জারি বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সেখানে ব্যান্ডেজ বাঁধাবস্থায় শিশুটির চিকিৎসা চলছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, শিশুটিকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তাররা। গতকাল এ নিয়ে আট সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের প্রধান হচ্ছেন শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার আশরাফুর হক কাজল। তিনি বলেছেন, শিশুটির সুচিকিৎসার জন্য, যা করা দরকার সবই চলছে। শিশুটির অবস্থা আগের চেয়ে উন্নত বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।
এ দিকে বিষয়টি নিয়ে মাগুরার প্রশাসনও ওঠে পড়ে লেগেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারেরও খবর পাওয়া গেছে। তবে মূল অপরাধীরা ঘটনার পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। তারা আশপাশের এলাকায় গিয়ে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, এই দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ দিনই বিবাদ চলে আসছে। স্থানীয় প্রশাসন আগে থেকেই তা জানত। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা করেনি। যার নির্মম পরিণতি থেকে গর্ভের শিশুও রেহাই পায়নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন