প্রথম আলো লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
প্রথম আলো লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৬

ঘুম যদি কম হয়

কারও হয়তো রাতে ভালো ঘুম হয় না। কেউ সারা রাত জেগে কাজ করেন বা ফেসবুক নিয়ে থাকেন। কেউ অনেক রাত জেগে টিভি দেখেন। কারও কারও হয়তো পেশাগত কাজটাই রাতে। দিনের পর দিন এ রকম ঘুমের স্বল্পতা আপনার ক্ষতি করতে পারে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নির্ঘুমতা আপনার শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা তৈরি করতে পারে।
ঘুম অবশ্য নির্ভর করে বয়স, কাজের ধরন ইত্যাদির ওপর। যেমন ছোট শিশুরা দিনে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুমায়। কিশোর-তরুণদের দিনে সাড়ে আট থেকে সাড়ে নয় ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা বা সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা হতে পারে এই সময়।
এখন দিনের পর দিন এই ঘুমের সময়টা ওলটপালট হলে তার প্রভাব পড়ে দেহ-মনে। ধারাবাহিক ঘুমের স্বল্পতা মানুষের স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়, বিষণ্নতায় আক্রান্ত করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে। ঘুমস্বল্পতা চলতে থাকলে ব্যথা-বেদনার অনুভূতিতে পরিবর্তন আসে। ফলে অল্পতে বেশি ব্যথা হয়। প্রভাব পড়ে হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতায়ও। দৈনন্দিন কাজেও মনোযোগ কমে গিয়ে দক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। তাই কম ঘুমিয়ে রাত কাটানো বন্ধ করুন।
ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন
মেডিসিন বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খাওয়া উচিত?
উত্তর: কোষ্ঠকাঠিন্যে ইসবগুলের ভুসি-জাতীয় খাবারের উপকারিতা হচ্ছে এগুলো উচ্চ আঁশযুক্ত, তাই অন্ত্রে হজম হয় না এবং মলত্যাগ করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে ভিজিয়ে না রেখে পানিতে গুলে সঙ্গে সঙ্গেই পান করা ভালো।
আখতারুন নাহার
প্রধান পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল
স্বাস্থ্যবটিকা ® ব্রোন স্মিথ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের জোর কতটা কমে?
৬৫ বছর বয়সের শুরুতে নারীদের হাতের শক্তি বছরে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে কমে। আর পুরুষেরা এই সামর্থ্য হারান ৩ থেকে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। বয়স ৮০ পেরোলে হাতের শক্তি আরও দ্রুত কমতে থাকে। মুঠোর দৃঢ়তা বজায় রাখতে কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
তুমি এটা খুলে দেবে?
দুঃখিত, আমি ৬৫ পেরিয়ে গেছি
‘স্বাস্থ্যবটিকা’র লক্ষ্য রোগনির্ণয় গোছের কিছু নয়

বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

ধর্ষণের অভিযোগে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলায় বাসায় আটকে রেখে কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় গৃহকর্মীর বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।


গৃহকর্মীর পরিবার জানায়, ওই কিশোরীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল তাঁর ঢাকার বাসায় ওই কিশোরীকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসেন। যুবলীগ নেতার স্ত্রী চাকরি করেন বলে বেশ কিছুটা সময় বাইরে থাকতেন। এ সুযোগে শাহজালাল তাকে বাসায় জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে গত শনিবার শাহজালাল তাকে বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে চাঁদপুরে নিয়ে গিয়ে এক স্থানে ফেলে পালিয়ে যান। পরে ওই কিশোরী লক্ষ্মীপুরে বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের এ ঘটনা জানায়।

ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, এ ব্যাপারে রায়পুর থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। থানা থেকে বলা হয়, ঘটনাস্থল ঢাকা হওয়ায় সেখানকার সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে হবে। এরপর গৃহকর্মীকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের অনুমতি নেই বলে গৃহকর্মীকে ভর্তি করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণ ও পরবর্তী ঘটনা জানিয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সুপার শাহ মিজান সাফিউর রহমান আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। রায়পুর থানার পক্ষ থেকে বিষয়টি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় জানানো হয়। রায়পুর থানার তত্ত্বাবধানে গৃহকর্মীর পরিবারকে শেরেবাংলা নগর থানায় পাঠানো হয়। আজ সকালে গৃহকর্মীর বাবা এ থানায় শাহজালালকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আজ সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে যোগাযোগ করা হলে যুবলীগ নেতা শাহজালালের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গত সোমবার তিনি ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছিলেন, রাজনীতি করার কারণে একটি চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরী আজ ঢাকা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়েছে। বর্তমানে ওই কিশোরীকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বয়স নির্ধারণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হবে।

সরকারদলীয়দের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য পায় না দুদক


পাঁচ বছরে দুদকের কৌশলী পদক্ষেপে সরকারি দলের দুই শতাধিক রাজনীতিবিদ ও সরকার-সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তি দুর্নীতির মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে বিরোধী দলের রাজনীতিবিদেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মামলা থেকে রেহাই পাননি।
ওই সময়ে আরও কয়েক হাজার প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়লেও অনুসন্ধান পর্যায়ে নথিভুক্ত (মামলার জন্য উপযুক্ত নয়) এবং মামলা করার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়েছে। কমিশনের ভাষায় ‘অভিযোগের আমলযোগ্য তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার কারণে’ তাঁরা অব্যাহতি পেয়েছেন।
তবে দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে দুদক কাউকেই ছাড় দেয় না। কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করে না। অনুসন্ধানের সময় আদালতে উপস্থাপন করার মতো তথ্য না পেলে অভিযোগটি নথিভুক্ত করে কমিশন। আর তদন্তে কোনো অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়া গেলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের জন্য ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার কয়েকবারে ৩৩৭ জনের তালিকা পাঠায় দুদকে। তাঁদের সবাই সরকারদলীয় নেতা কিংবা সরকার-সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তি। কিন্তু দুদক আইনে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনা করে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ না থাকায় ভিন্ন কৌশলে তাঁদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগের ‘সত্যতা’ না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া, ‘মানবিক বিবেচনা’য় আপিল না করা এবং আপিলের পর উচ্চ আদালতে উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজের আবেদন করা—এ তিন পদ্ধতিতে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
কিন্তু গত ১২ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ হাজি সেলিমের দুর্নীতির মামলা শেষ মুহূর্তে না চালানোর জন্য দুদকের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি ওই আদেশে বলেন, শুনানিকালে এভাবে খারিজের আবেদন করা বা মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে আদালত বিভ্রান্ত হন। হাজি সেলিমের এই মামলায় ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন। রায়ে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের দণ্ড বাতিল হয়।
দুদকের প্যানেল আইনজীবী খুরশিদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, যে আইনি ব্যাখ্যার ভিত্তিতে আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা খুবই স্পষ্ট। তাই একই ধরনের কোনো মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে আপিল বিভাগ নিরুৎসাহিত করেছেন।
সরকারি দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এভাবে একের পর এক ছাড় পেয়ে গেলেও বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বা তদন্তে খুবই কঠোর অবস্থানে দুদক। এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদকে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ’৯৬ সালের একটি নোটিশের ধারাবাহিকতায় সম্পদ বিবরণী দিতে হয়েছে দুদকে। গত বছর হিসাব বিবরণী দিতে দুদকে এসে অলি আহমদ সাংবাদিকদের কাছে বলেন, মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করার খেসারত হিসেবে তাঁকে দুদকে আসতে হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও তাঁর প্রবাসী ভাই মঞ্জুর আহমদ, বিএনপির নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার, এম মোরশেদ খান, আলী আসগার লবি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা, মোসাদ্দেক আলী ফালু, এহছানুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দুদকের মামলায় লড়ছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের একাধিক মামলা চলছে। তবে খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির একটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় দুদক। আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা পরিচালনার সময় সিঙ্গাপুর থেকে পাচার করা অর্থ ফেরত এনেছে দুদক।
দুদকে আসা অভিযোগ ও অনুসন্ধানের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন লাখের বেশি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার অভিযোগের অনুসন্ধান হয়। বাকি অভিযোগগুলো দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অনুসন্ধানের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। ২২ হাজার অভিযোগ অনুসন্ধানের পর প্রায় চার হাজার মামলা করা হয়। অভিযোগের ‘সত্যতা’ না পাওয়ায় নথিভুক্ত করা হয় প্রায় ১৮ হাজার অভিযোগ। এর মাধ্যমে ১৮ হাজার ৩৯ জন দুদকের অব্যাহতিপত্র পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ী ৬৯৭ জন, বিভিন্নভাবে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি ১৫ হাজার ১১ জন এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন অন্তত তিন হাজার।
অন্যদিকে এ সময়ে করা মামলাগুলোর মধ্যে ১ হাজার ১৩১টির অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ২ হাজার ৮৬৭টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ৩ হাজার ২২ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারদলীয় নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ী রয়েছেন ৮৬১ জন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাপক হারে দায়মুক্তির কারণে এ প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক যে দুদক বাস্তবেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের ঊর্ধ্বে উঠে পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে কি না।
অভিযোগ থেকে দায়মুক্তির ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখা গেছে, অনেক ঘটনায় দৃশ্যমান প্রমাণ থাকলেও দুদকের কর্মকর্তারা এর কোনো প্রমাণ পাননি। নির্বাচন কমিশনে নিজেদের দেওয়া হলফনামায় আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ থাকলেও ‘ভুল হয়েছে’ অজুহাত গ্রহণ করে অনেককে দায়মুক্তি দিয়েছে দুদক। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বেশ জোরালো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আলোচিত অনেক ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তি পেয়েছেন বলে কথিত রয়েছে।
নবম জাতীয় সংসদের হলফনামা নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শেষে হলফনামায় তথ্য দিতে ‘ভুল হয়েছে’ যুক্তি গ্রহণ করে আ ফ ম রুহুল হক ও আসলামুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় সংস্থাটি। সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে ২১৩ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে অনুসন্ধান কর্মকর্তা মামলার সুপারিশ করলেও তাঁকে অব্যাহতি দেয় কমিশন। তবে সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সাংসদ আবদুর রহমান বদি, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও সাতক্ষীরার সাবেক সাংসদ আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বন্ধুদের সম্মাননা দেওয়ার সময় ক্রেস্টের সোনা জালিয়াতির অনুসন্ধানের কাজ শুরু হলেও দীর্ঘদিনেও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই।
রেলওয়ের দুর্নীতির কালো বিড়াল ধরার ঘোষণা দিলেও দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার অভিযোগ ওঠে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে। কিন্তু ঘুষের তথ্য ফাঁসকারী ইউসুফ আলী মৃধার গাড়িচালক মো. আলী আযম প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিতে না আসায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করে তাঁকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর রেলওয়ের নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে ১৩টি মামলা করে দুদক। ওই সব মামলার প্রধান আসামি ইউসুফ আলী মৃধাকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে ছয়টি মামলার অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বহুল আলোচিত হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠলেও মামলায় তাঁকে আসামি করেনি দুদক। দায়মুক্তি দেয় অনুসন্ধান পর্যায়েই। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকেও মামলায় আনা হয়নি। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য থাকলেও দুদকের করা ৫৬টি মামলার একটিতেও আবদুল হাই বাচ্চু বা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি।
পেট্রোবাংলায় নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুরের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেওয়া হলেও মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদে ৪০৩টি হজ এজেন্সিকে লাইসেন্স দেওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অনুসন্ধান চালায়নি দুদক। অথচ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস সৌমেন্দ্র লাল চন্দর বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এ ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে দায়মুক্তি পেয়েছেন ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাংসদ হাজি সেলিম, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান, আনন্দ শিপইয়ার্ডের মালিক আবদুল্লাহিল বারী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল হুদা, ইউসিবিএলের এমডি মুহাম্মদ আলী, সোনালী ব্যাংকের সিবিএর সাধারণ সম্পাদক হাসান খসরু, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুছুর রহমান, পুলিশের ডিআইজি (এসবি) মো. রফিকুল ইসলাম, এসপি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

BD News

বিডি নিউজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আলোকিত নাম, বাংলাদেশের জাতিয় মাধ্যম গুলি জখন সৈরাচার শাসক এর দখলে, তখনি সত্যর বানি নিয়ে হাজির বিডি নিউজ, এটি সুদখ্য  সম্পাদক দারা পরিচালিত, সারা বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা সব খবর সাথে সাথে প্রচার করা হয়, দেশের বাহিরেও রয়েছে অসংখ্য সাংবাদিক, তারা প্রতি মুহূর্তেই আপডেট দিয়ে থাকেন প্রবাসের খবর, বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ার শুধুমাত্র বিডি নিউজেই রয়েছে ২৪ ঘন্টা অনলাইন,
আপনার যেকোনো খবর আমাদের পেজে প্রচার করতে যোগাযোগ করুন Facebook page

রাজস্ব আদায় ১৪% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ৮ হাজার কোটি টাকা

রাজস্ব আদায় ১৪% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ৮ হাজার কোটি টাকা
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ রাজস্ব ১৪ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। অবশ্য এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ মাসে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় নি। আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৮ হাজার ৮ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা।
সূত্র জানিয়েছে, সর্বশেষ গত নভেম্বরে রাজস্ব আদায়ে বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা যা গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের নভেম্বরে আদায় হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছর ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে এনবিআরকে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে বছর শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সমপ্রতি এক প্রাক্কলনে জানিয়েছে, অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
অবশ্য এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান মনে করেন, বছর শেষে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। ইত্তেফাককে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে গতি বেড়েছে। গেল নভেম্বরের রাজস্ব আদায়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এর বড় প্রমাণ। তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা ও বিপিসি’র কাছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার বকেয়া রাজস্ব আদায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মামলায় আটকে থাকা ৩১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব উদ্ধারেও তত্পরতা শুরু হয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড  বাড়ার ফলে আমদানি রপ্তানিতে গতি ফেরা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে অগ্রগতির ফলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের শুরুতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হলেও কাঙ্খিত পরিমানে আদায় না হওয়ায় পরবর্তীতে তা কমিয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। বছর শেষে অবশ্য ওই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা হলেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশের কিছু বেশি। চলতি বছর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাষী আখ্যা দিয়ে অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, স্বাধীনতার পর কখনোই ২৯ শতাংশ হারে রাজস্ব আদায় বাড়েনি। একবারই ২২ শতাংশ হয়েছিল ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ত্তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, আমদানি-রপ্তানিতেও আহামরি গতি নেই। বিনিয়োগেও গতি মন্থর। ফলে সার্বিক বিবেচনায় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন হওয়ার কথা নয়।